নির্বাচনি চূড়ান্ত গেজেট বাতিলের প্রস্তাব নাকচ
২৯ মার্চ ২০২৩, ০৪:৪২ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
অনিয়ম তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্বাচনি ফলাফলের চূড়ান্ত গেজেট বাতিল করার ক্ষমতা দিয়ে আরপিও সংশোধনী প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে গ্রহণ বা নাকচ করেনি মন্ত্রিসভা। তবে কার্যত ঐ প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেছে।
কারণ, এটা করা হলে অনেক মামলা-মোকদ্দমার উদ্ভব হবে—এমনই কথা বলেছেন অন্তত তিন জন মন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আরপিও সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো পূর্ণাঙ্গ যাচাইবাছাই করে চূড়ান্ত অনুমোদনকালে বিবেচনা করা হবে। দায়িত্বশীল একটি সূত্র এই তথ্য দিয়েছে।
নির্বাচনি আইন তথা গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাবে সংশোধন-সংযোজনসহ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংশোধনী প্রস্তাবে জেলায় একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের পরিবর্তে প্রতিটি জেলার সঙ্গে নির্বাচনি এলাকা শব্দ সংযোজন করা হয়েছে। কারণ একাধিক উপজেলা নিয়ে নির্বাচনি এলাকা আবার একই নির্বাচনি এলাকার মধ্যে অন্য জেলার উপজেলা বা ইউনিয়ন রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে যাতে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে কিংবা কাজ করতে সমস্যা না হয়, সেজন্য জেলার সঙ্গে নির্বাচনি এলাকা শব্দ সংযোজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম। কিন্তু ৩০০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের যে কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।
বিদ্যমান আইনে জেলায় একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তিনি আবার নির্বাচনি এলাকার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রত্যর্পণ করে থাকেন। মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া আরেকটি প্রস্তাবে ভোট গ্রহণের সময় বৈধভাবে দায়িত্বপালনকারী কোনো সংবাদকর্মীকে বেআইনি বাধা প্রদান করলে ‘রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্যা পিপল (অমেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২৩’ আইনের আওতায় দোষি ব্য্যক্তিকে দুই থেকে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখার কথা বলা হয়েছে। বর্তমান আইনে গণমাধ্যমকর্মীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের স্বাধীনতা নেই।
এ সংক্রান্ত দুটি পৃথক আইন সংশোধন করার প্রস্তাবে কিছু সংশোধনী ও সংযোজনসহ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটি এখন মন্ত্রিসভায় সংশোধন ও সংযোজনসহ আইনের খসড়া পুনরায় মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। তখন অনুমোদন দিলে তা সংশোধিত আইন আকারে সংসদে উত্থাপিত হবে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব ও সংশ্লিষ্ট সচিবেরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতি আসনে রিটার্নিং অফিসার রাখার প্রস্তাব: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমানে প্রতি জেলায় একজন করে রিটার্নিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। প্রতি আসনে একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসার থাকেন। সংশোধিত আইন কার্যকর হলে আগামীতে প্রতি জেলার সঙ্গে প্রয়োজনে নির্বাচনি এলাকার জন্য একজন করে রিটার্নিং অফিসার রাখার প্রস্তাব দিয়ে ‘নির্বাচনি আইন বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)’ সংশোধনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আরো যেসব বিষয় সংযোজন করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কোনো প্রার্থীর সেবা সংক্রান্ত বিল (ইউটিলিটি বিল) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সাত দিন আগে পরিশোধের বিধান ছিল। এখন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনই করা যাবে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে টিআইএন সার্টিফিকেট সংযুক্ত করতে হবে এবং কত টাকা আয়কর জমা দিয়েছে, তার রশিদসহ সংযুক্ত করতে হবে। এটা আগে ছিল না। এ দুটি অংশ যোগ করা হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) মো. মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, এটা নীতিগত অনুমোদন হলো। আরো যাচাইবাছাই শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় আনা হবে। আইনটি হবে, এটাই শুধু অনুমোদন হলো।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 983 বার