মেক্সিকোর মাদক সম্রাটের ছেলেকে গ্রেপ্তারে অভিযান, সেনাসহ নিহত ২৯
০৭ জানু ২০২৩, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মেক্সিকোর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জোয়াকিুইন গুজমানের ছেলে ওভিদিও গুজমানকে গ্রেপ্তার অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ২৯ জন। নিহতদের মধ্যে সেনাসদস্যদের সংখ্যা ১০ জন, বাকিরা সবাই গুজমান গ্যাংয়োর অনুসারী।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুইস ক্রিসেনসিও স্যান্দোভাল শুক্রবার রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মেক্সিকোর অপরাধ জগত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ৬৫ বছর বয়সী জোয়াকুইন গুজমান ‘এল চ্যাপো’ নামে পরিচিত, যার আক্ষরিক বাংলা অর্থ ‘পিচ্চি’ বা ‘ছোটো’। তার ছেলে ওভিদিও গুজমানেরও একটি বিশেষ নাম আছে। ‘এল র্যাটন’ বা ‘ইঁদুর’ নামে পরিচিত তিনি।
মেক্সিকোর সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ সিনালোয়ার রাজধানী কুলিয়াকান থেকে ওভিদিওকে গ্রেপ্তার করে রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে নিয়ে আসে। সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে তাকে রাজধানীতে আনা হয়।
তবে এই অভিযান মোটেও সহজ ছিল না। গুজমান গ্যাংয়ের সিনালোয়া শাখার সদস্যরা ওভিদিওকে ছিনিয়ে আনতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন।
মেক্সিকোর প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুইস ক্রিসেনসিও স্যান্দোভাল শুক্রবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘সামরিক বাহিনীর ১০ জন সদস্য (সিনালোয়ায়) তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। এছাড়া নিহতদের বাকি ১৯ জন গুজমান গ্যাংয়ের সদস্য।’
২০১৬ সালে মেক্সিকোর সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত মেক্সিকোর সবচেয়ে শক্তিশালী সন্ত্রাসী গ্যাংটি চালাতেন জোয়াকুইন গুজমান। মাদক ব্যাবসায়ী হিসেবে গুজমান ও তার গ্যাংয়ের উত্থান ঘটেছিল এই সিনালোয়া প্রদেশেই। ফলে মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুজমান গ্যাংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল সিনালোয়া। ২০১৭ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে কারাগারে পাঠায় মেক্সিকো সরকার।
হেরোইন-কোকেন-গাঁজার পাশপাশি গত কয়েক বছর ধরে ফেন্টানাইল নামের একটি সিনথেটিক মাদকের ব্যবহার বন্যার মতো ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-ইউরোপে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মাদক হেরোইনের চেয়েও ৫০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই ফেন্টানাইল।
৬৫ বছর বয়সী জোয়াকুইন গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তার ছেলে ওভিদিও বাবার মাদকব্যবসা দেখাশোনা করতেন। তার অধীনে সিনালোয়াতে অন্তত এক ডজন ল্যাব পরিচালনা করত গুজমান গ্যাং। এসব ল্যাবে ফেন্টানাইলসহ বিভিন্ন মাদক প্রস্তুত করা হতো।
মেক্সিকোর পাশপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায়ও আছেন ওভিদিও। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর এক বার্তায় জানিয়েছেন, কারাবন্দি হিসেবে ওভিদিওকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার