বান্দরবানে গুলিতে সেনাসদস্য নিহত, আহত ২
১৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪০ অপরাহ্ণ
অনলাইন ডেস্ক:
বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি’র (কেএনএ) অতর্কিত হামলায় নাজিম উদ্দিন নামে সেনাবাহিনীর এক মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার প্রাণ হারিয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন দুই সেনা সদস্য। মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে যাওয়া দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন এই সেনাসদস্যরা।
রোববার (১২ মার্চ) আনুমানিক বেলা ১টায় কেএনএ-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল অতর্কিত হামলা চালায়। মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন ৩০ বছর ধরে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি রংপুর সদরের ঘাঘটপাড়া গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে। তার মৃত্যুতে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাবধারার কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি নামক সন্ত্রাসী দলটি এর আগেও ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’র মতো একটি জঙ্গী গোষ্ঠীকে পাহাড়ি এলাকায় অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র-প্রশিক্ষণ দিয়েছে। পাহাড়ি এলাকার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য সরকারের বান্দরবানের থানচি সড়ক প্রকল্প সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের এই উন্নয়নমূলক কার্যক্রম প্রতিহত করতে কেএনএ সন্ত্রাসী দলটি সড়ক নির্মাণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঠিকাদার, মালামাল সরবরাহকারী এবং শ্রমিকদের নিকট থেকে চাঁদা দাবি করে। পরবর্তীতে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেয়। কিন্তু এ কাজ চলমান থাকায় কেএনএ সন্ত্রাসী দল গত ১১ মার্চ ১২ জন শ্রমিককে অপহরণ করে। এদের মধ্যে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয় এবং চারজন শ্রমিককে এখনও কেএনএ জিম্মি করে রেখেছে। অবশিষ্ট সাত জন শ্রমিককে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিলেও তাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করার হুমকি দেওয়া হয়। এসবের জেরে কেএনএ ১২ মার্চ সেনাবাহিনীর টহলদলের ওপর গুলিবর্ষণ করতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে বান্দরবানের তিন উপজেলায় গাড়ি চলাচল বন্ধের জন্য পরিবহন মালিক সমিতিকে হুমকি দিয়ে নোটিশ জারি করে। কেএনএ সদস্যদের নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নিরাপত্তাজনিত কারণে গত রোববার (১২ মার্চ) ওই এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। এছাড়া কেএনএ’র নির্যাতনে স্থানীয় বিভিন্ন পাহাড়ি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী ঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে। কেএনএ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর চাঁদাবাজি, মাদকের চোরাচালান, অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের কারণে বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, বেসরকারি বিনিয়োগ ও পর্যটন শিল্প বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর সূদুরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 983 বার