তারেক রহমানের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৪ হাজার সদস্য
২৫ ডিসে ২০২৫, ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:
দীর্ঘ ১৭ বছর ৩ মাসের নির্বাসিত জীবন শেষে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে ৪ হাজার ৬৪৯ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের সমন্বয়ে এক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো পরিকল্পনাকে ৯টি সুনির্দিষ্ট সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে গণসংবর্ধনাস্থল, এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং গুলশানের বাসভবন পর্যন্ত এই ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি এই কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি এবং বিএনপির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ‘চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স’ (সিএসএফ)।
নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারেক রহমানের জন্য বিশেষ এস্কর্ট ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে। বিমানবন্দরে একজন উপ-পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে ১৫৫ জন পুলিশ সদস্য এবং দেড় শতাধিক সেনাবাহিনীর সদস্য এস্কর্ট প্রদানের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এই পুরো নিরাপত্তা কার্যক্রমের সার্বিক তদারকি করছেন।
তার অধীনে সাতজন যুগ্ম পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে এপিবিএন-এর ১ হাজার ৫৬ জন, ডিবি পুলিশের ১০০ জন, এবং এটিইউ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া নারী পুলিশ সদস্য এবং ডগ স্কোয়াডও সক্রিয় রয়েছে।
বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সংলগ্ন সংবর্ধনাস্থলে যাতায়াতের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি বিবেচনা করে সেখানে ৭৮৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএমপির কড়া নির্দেশ অনুযায়ী, তারেক রহমানকে বহনকারী বহর এবং অনুমোদিত নির্দিষ্ট কয়েকটি গাড়ি ছাড়া আর কোনো যানবাহন এই পথে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
একই সঙ্গে সমাবেশস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৬৮২ জন সদস্য বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব পালন করছেন। জনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ডিএমপি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশান এবং বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতাল এলাকা পর্যন্ত ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
সরকারের পক্ষ থেকেও তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন যে, সরকার তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে স্বাগত জানায় এবং তার দলের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিএনপির দলীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর ভিড় সামলাতে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখাগুলো বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। গুলশান ও সংলগ্ন এলাকাগুলোতে রুফটপ নিরাপত্তা বা ভবনের ছাদেও বিশেষ প্রহরা বসানো হয়েছে।
তারেক রহমান বর্তমানে তার বহনকারী ফ্লাইটে রয়েছেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢাকায় অবতরণের কথা রয়েছে। বিমানবন্দরে দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি সংবর্ধনাস্থলে যাবেন এবং সেখান থেকে অসুস্থ মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যাবেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 989 বার