বিয়ানীবাজারের একজন মানবিক ইউএনও গোলাম মুস্তাফা মুন্না
২০ অক্টো ২০২৫, ০৬:৫৪ অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:
কখনও সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে মানুষকে সচেতন করছেন, কখনও ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন অপরাধী ধরতে। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি বিয়ানীবাজার উপজেলাবাসীকে সেবা দিতে প্রাণান্ত ছুটে চলেছেন তিনি। ‘জনসেবাই জনপ্রশাসন’ এ বাক্যটির বাস্তব উদাহরণ যেন এখানকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গোলাম মুস্তাফা মুন্না। প্রশাসনের দায়িত্বের পাশাপাশি একাধারে উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার প্রশাসক এর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কাজ পাগল মানুষ বলতে যা বোঝায় এ যেন ঠিক তাই! সকাল নয়টা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত দাফতরিক কাজ করা এটা যেন তাঁর প্রতিদিনের রুটিন। বিয়ানীবাজারের সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রশিক্ষণে থাকায় এই দপ্তরও সামলাচ্ছেন তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন হতদরিদ্র, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, গরিব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ানো তাঁর দৈনন্দিন কাজের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন রাস্তায় সংস্কার প্রয়োজন, কোন এলাকায় নদী ভাঙ্গন, কোথায় সরকারি স্বার্থ নিহিত-তার সবকিছুই দেখভাল করছেন গোলাম মুস্তাফা মুন্না। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন অপরাধী ধরতে।
গোলাম মুস্তাফা মুন্না এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে পাল্টে গেছে অনেক দৃশ্যপট। পৌরশহরের ফুটপাত দখল মুক্ত করা হয়েছে, উচ্ছেদ হয়েছে অবৈধ স্থাপনা। সরকারের উন্নয়নের ধারাকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে নিরলসভাবে নিয়োজিত আছেন তিনি। কথাবার্তায় মার্জিত ও আচরণে অত্যন্ত ভদ্র, সাদামাটা, সহজ-সরল স্বভাবের এই কর্মকর্তা মাত্র এক বছরে উপজেলাবাসীর মন জয় করে নিয়েছেন। সার্বক্ষণিক সেবামূলক কাজ করে মানবিক ইউএনও হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তাঁর কার্যালয়ে প্রবেশ করতে লাগে না কোন অনুমতি। যে কেউ তার অফিসে বিনা-অনুমতিতে প্রবেশ করতে পারেন।
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি কারণে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন তিনি । উপজেলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ইভটিজিং, মাদক, খাবার হোটেল, নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল বিক্রি বন্ধে তাঁর রয়েছে বিশেষ নজরদারি। কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন বন্ধে নিচ্ছেন কঠোর ব্যবস্থা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্নার উপর সন্তুষ্ট বিয়ানীবাজারবাসী। বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ প্রতিকারে আশ্রয়স্থলের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন তিনি। গোলাম মুস্তাফা মুন্না যোগদানের পরে উপজেলা পরিষদের আবাসিক কোয়ার্টারগুলো বাসযোগ্য করে তোলা, উপজেলা প্রশাসনে নতুন রূপে সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে। তাঁর সততা ও কর্মদক্ষতায় পাল্টে গেছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র। প্রতিটা দফতরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ঐক্য ও মনোবল সৃষ্টি হয়েছে। কমেছে জনভোগান্তি আর বৃদ্ধি পেয়েছে জনসেবার মান।
বিয়ানীবাজার উপজেলা এনসিপির সমন্বয়ক রায়হান আলম সাজু জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একজন সৎ ও কর্মঠ মানুষ বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের মতো তিনটি অতি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব পালন করার পরেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার মতো কোনো কিছু আমার নজরে পড়েনি। সরকারি নির্দেশনাগুলো তিনি খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করে তা সফল বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেন।
উপজেলা সুজনের সেক্রেটারী খালেদ আহমদ জানান, প্রাতিষ্ঠানিক কারণেই ইউএনও মহোদয়ের খুব কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। কখনও ব্যক্তিগত কাজ, কখনও সামাজিক আবার কখনও প্রাতিষ্ঠানিক কাজ নিয়ে আমি তার কাছে গিয়েছি, উপস্থাপন ভঙ্গি অত্যন্ত চমৎকার। একটি নেগেটিভ মেসেজকে পজিটিভ আকারে নিয়ে আসার যোগ্যতা তার রয়েছে।
বিয়ানীবাজার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের আহবায়ক অমলেন্দু দে জানান, বর্তমান ইউএনও মহোদয় যোগদানের পর দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাম্যনীতি অনুসরণ করে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করে এলাকাবাসীর আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, আমি কাজে বিশ্বাসী সৎভাবে থাকতে চাই। আমার ওপর অর্পিত সব দফতরের সরকারি নির্দেশনা সফলভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কোনো সমস্যা মনে হলে আমার কাছে আসুন ভুল ত্রুটি দেখিয়ে দেন আমি সবার সহযোগিতায় সমাধান করার চেষ্টা করব।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার