সিলেটে নাটকের অভিনেত্রী হত্যায় মামলা হয়নি, আটকও নেই
১৩ ফেব্রু ২০২৩, ০১:১৩ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট নগরের খুলিয়াটুলা এলাকার একটি কক্ষের খাটের ওপর থেকে সনিয়া আক্তার (২১) নামে এক কলেজছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনার এক দিন পরও মামলা হয়নি।
এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত বা আটকও করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে, দোষী ব্যক্তিদের ধরতে তারা অভিযান চালাচ্ছে। ওই তরুণী স্থানীয় নাটকে অভিনয় করতেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে এসব জড়িত কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে নগরের খুলিয়াটুলা এলাকার জহুর আলীর বাসা থেকে সনিয়া আক্তারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। সনিয়া সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার শীতল জোড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার মেয়ে।
নিহত সনিয়ার মা অমিতা বেগমের দাবি, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে কয়েক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে হত্যাকারী। তবে মেয়েকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, সেটা তিনি বুঝতে পাচ্ছেন না।
পুলিশ ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সনিয়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খুলিয়াটুলা এলাকার জহুর আলীর বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা নূরজাহান মেমোরিয়াল মহিলা কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। তবে কিছুদিন ধরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন। বর্তমানে স্থানীয় কিছু নাটকে অভিনয় করছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পেছনে এসব বিষয় জড়িত কি না, সেটিও তদন্ত করছে পুলিশ। সোনিয়ার বাবা সেলিম মিয়া অসুস্থ হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সনিয়ার মা রোববার সকাল থেকে সিলেট এম এজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিলেন।
অন্যদিকে, তার ভাইও বাবাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সে সময় ঘরে সনিয়ার ভাবি ফারিয়া বেগম ও মামাতো ভাই সজীব ছিলেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ফারিয়া বেগম হঠাৎই সনিয়ার কক্ষের খাটের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় সোনিয়াকে দেখতে পান।
এ সময় ফারিয়ার চিৎকারে আশপাশের মানুষ আসেন। পুলিশের সিআইডির ক্রাইম সিন ও পিবিআইয়ের সদস্যরা রহস্য উদ্ঘাটনে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সে সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা কাঁচি উদ্ধার করা হয়।
তবে সনিয়ার লাশ উদ্ধারের পর একটি নামই বারবার ঘুরেফিরে আলোচিত হচ্ছে। পরিবারের সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সজীব নামের এক যুবক সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন। তবে সজীবকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত নাগালে পায়নি পুলিশ। সজীব সম্পর্কে সনিয়ার মামাতো ভাই। গত শনিবার রাতে সজীব সনিয়াদের বাড়িতেই ছিলেন। পরে সকাল সাতটার দিকে তিনি তাঁদের বাসা থেকে চলে যান। এরপর সজীবকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানালেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সিলেটের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, বিষয়টি হত্যাকাণ্ড হিসেবেই দেখছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে বিভিন্ন বিষয় সামনে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সনিয়ার সঙ্গে বন্ধু, মামাতো ভাইসহ কয়েকজনের চলাফেরা ছিল। সব মাথায় নিয়েই তদন্ত চলছে। আশা করা হচ্ছে, ঘটনার জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার