জাতীয় পার্টি কি সরকারের কৌশলের বাইরে ভিন্ন অবস্থান নিতে পারবে
১২ ফেব্রু ২০২৩, ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি আনুগত্যের বাইরে গিয়ে জাতীয় পার্টি কখনো স্বতন্ত্র কোনো অবস্থান নিতে পারবে কি না, এই প্রশ্ন আবারও আলোচনায় এসেছে নির্বাচন সামনে রেখে।
কারণ, তিন মাস পর আদালতের নির্দেশে দলের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়ে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের আবার দলের কর্মকাণ্ডে তৎপর হয়েছেন। তিনি দলীয় কর্মসূচিতে যেসব বক্তব্য দিচ্ছেন, তাতে থাকছে সরকারের সমালোচনা।
গত কয়েক দিনে দেওয়া বক্তব্যের সমর্থনে তিনি এমন মন্তব্যও করেছেন— ‘সরকারের সমালোচনা মানেই রাষ্ট্রদ্রোহ নয়।’ সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদেরও অনেকে সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু সরকারের কৌশলের বাইরে গিয়ে জাতীয় পার্টির ভিন্ন কোনো অবস্থান নেওয়া বেশ কঠিন, দলটির ভেতরেই এমন ধারণা রয়েছে। সরকারবিরোধী দলগুলোর কাছে এবং সাধারণভাবেও জাতীয় পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, দলটি আগামী নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির দর-কষাকষির লক্ষ্য নিয়ে এখনই একটা অবস্থান তৈরি করতে চাইছে।
গত দুটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সুতার নাটাই ছিল ক্ষমতাসীনদের হাতে। তখনকার ঘটনাপ্রবাহে তা স্পষ্ট ছিল। ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে অংশীদার হয়েছিল জাতীয় পার্টি। দলের তিনজন নেতা আওয়ামী লীগ সরকারে মন্ত্রী হয়েছিলেন। একই সঙ্গে দলটি বিরোধী দলের আসনে বসেছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সমঝোতায় যেতে হয়েছিল জাতীয় পার্টিকে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সংসদেও বিরোধী দলের আসনে রয়েছে জাতীয় পার্টি। নির্বাচন ঘিরে দলটির কর্মকাণ্ডে নানা আলোচনাও রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। জাতীয় পার্টিকে ‘গৃহপালিত’ বিরোধী দলের বিশেষণও অনেকে ব্যবহার করে থাকেন।
সরকারের হাতে থাকা নাটাইয়ের সুতা ছিঁড়ে জাতীয় পার্টি কখনো বেরিয়ে আসতে পারবে, সেটি সরকারের বাইরে থাকা দলগুলো এখনো বিশ্বাস করে না। সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশের কাছেও জাতীয় পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
তবে গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে সংসদের ভেতরে এবং বাইরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তাতে ছিল মূলত সরকারের সমালোচনা। তিনি সরকারবিরোধী অবস্থান নিচ্ছেন কি না, সরকারবিরোধী আন্দোলনের ব্যাপারে বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়েছে কি না, এসব নানা প্রশ্নে তখন নানা আলোচনা ছিল। সে সময়ই দলটিতে নেতৃত্ব নিয়ে পুরোনো কোন্দল নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছিল।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার