একজন মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

০৬ ফেব্রু ২০২৩, ১২:১২ অপরাহ্ণ


একজন মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের

স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, কনস্টিটিউশনাল (সাংবিধানিক) গ্যারান্টি দেওয়া হোক বা না দেওয়া হোক একজন মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

রোববার (৫ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে বিচারপতি এফ আর নাজমুল আহসানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্বরণসভা ও স্মারক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও শপথ নিতে না পারা প্রয়াত বিচারপতি এফ আর নাজমুল আহসান স্মরণে স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রয়াত বিচারপতি নাজমুল আহসান ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়ন বা কমিউনিস্ট পার্টি করতেন তা আমরা জানি। ছাত্র ইউনিয়ন বা কমিউনিস্ট পার্টির তাত্ত্বিকতার দিকে আমি যাচ্ছি না। এটাও বলতে চাচ্ছি না যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান, সেখানে কমিউনিজমের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু; সেটাও তাত্ত্বিকতা বা প্র্যাকটিসের ব্যাপার; কিন্তু উনি কেন ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়ন বা কমিউনিস্ট পার্টি করতে গেলেন? আমার কাছে যেটা মনে হয়- সাধারণ মানুষের, অতি সাধারণ মানুষের প্রতি তার যে প্রচণ্ড মমত্ববোধ; যদি তাদের জন্য কিছু করা যায়, যদি সমাজে বিবর্তন বা পরিবর্তন আনা যায়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, কনস্টিটিশনাল (সাংবিধানিক) গ্যারান্টি দেওয়া হোক বা না দেওয়া হোক একজন মানুষের মিনিমাম রিকুয়্যারমেন্ট ফুলফিল (ন্যূনতম চাহিদা বা প্রয়োজনীয়তা পূরণ) করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। যখন তিনি (বিচারপতি নাজমুল আহসান) এসব দেখেছেন, আমার যেটা মনে হয়, রাষ্ট্র যে এসব বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারছে না, আমি আজও পত্রিকায় দেখলাম কতজন ৫ হাজার কোটি টাকার মালিক এ রকম একটি তালিকা।

বিচারপতি নাজমুল আহসান হয়তো ভাবতেন দেশটা এ কারণে স্বাধীন হয়নি। দেশটা স্বাধীন হয়েছে একটা লক্ষ্য নিয়ে সেটা হচ্ছে গ্রামে-গঞ্জের সাধারণ মানুষ, বস্তির মানুষ, তাদের মিনিমাম যে রিকুয়্যারমেন্ট- তাদের থাকা, খাওয়া, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সংস্থান করা। এটা যাতে পূরণের ব্যবস্থা রাষ্ট্র করে, কমিউনিজম, সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো, চায়নার মতো বা কিউবার মতো বাংলাদেশ সাকসেসফুল হবে কি না, তা আমি জানি না। কিন্তু উনি (বিচারপতি নাজমুল আহসান) ভাবতেন, উনার সঙ্গে মিশে আমার যেটা মনে হয়েছে, মানুষের জীবনের জন্য মিনিমাম ব্যবস্থাটাও যদি করা যায় তাহলে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম, এই রক্তদানটা সাকসেসফুল হবে। এসব ভিউ (দৃষ্টিভঙ্গি) থেকেই তিনি হয়তো ছাত্র ইউনিয়ন বা কমিউনিস্ট পার্টি করতেন।

বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আমি মনে করি উনি (বিচারপতি নাজমুল আহসান) একজন সাকসেসফুল মানুষ ছিলেন। একজন মানুষের যা পাওয়া উচিৎ, আমি মনে করি উনি ততটুকুই পেয়েছেন। আমরা তার রুহের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।

স্মরণসভার শুরুতে প্রয়াত বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসানের সহধর্মিণী নিলুফা সামসুন্নাহার সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন। হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার তোফায়েল হাসানের সঞ্চালনায় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।

অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, রাজনীতিবিদ মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার