স্বামীকে হত্যার ১৪ বছর পর স্ত্রী ও কথিত প্রেমিকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
১০ ফেব্রু ২০২৫, ০৬:০৬ অপরাহ্ণ


ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
প্রায় ১৪ বছর আগের একটি হত্যা মামলায় দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আলী মনসুর এ রায় ঘোষণা করেন। ময়মনসিংহ আদালতের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হাফিজা খাতুন (৪২) ও আবদুল্লাহ আল মাসুম (৩৬)। আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি দুজনকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অপর আসামি মো. আরমান মামলার সাক্ষ্য চলাকালে মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাছাড়া এ মামলায় জামিনে গিয়ে পলাতক থাকা আবদুল্লাহ আল মাসুমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
আদালত ও মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৮ জুন মুক্তাগাছা উপজেলার ভাবকী এলাকার দুবাই প্রবাসী হেলাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হাফিজা খাতুন ও হেলাল উদ্দিনের ১৪ বছরের সংসার জীবনে দুটি কন্যাসন্তান ছিল। ঘটনার তিন বছর আগে হেলাল উদ্দিন দুবাই চলে যাওয়ার পর তার স্ত্রী হাফিজা ডেসটিনিতে ভর্তি হন। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরঘাগড়া গ্রামের আবদুল্লাহ আল মাসুমের অধীনে কাজ করতেন। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হাফিজাকে বিয়ের আশ্বাসে ব্যবসার জন্য আড়াই লাখ টাকা নেন মাসুম। হেলাল উদ্দিন ২০১১ সালের ২৫ মে দেশে আসেন। এরপর স্ত্রীর কাছে টাকার হিসাব চাইলে নিজেদের মধ্যে তর্ক হয়। হেলাল উদ্দিন স্ত্রীর জন্য সোনার হার ও চেইন নিয়ে আসেন। সেই স্বর্ণালংকারও বন্ধক রেখে মাসুমকে ৪৫ হাজার টাকা দেন তার স্ত্রী।
এরপরই হেলাল উদ্দীনকে খুনের পরিকল্পনা শুরু হয়। ঘটনার দিন হাফিজা তার স্বামীকে ৬টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে মাসুমকে মুঠোফোনে খবর দেন। মাসুম ও তার এক সহযোগী দিবাগত রাত তিনটার দিকে বাড়িতে গিয়ে হেলাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে মাসুমের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতের আক্রমণে খুন হয়েছেন বলে প্রচার চালানো হয়।
এ ঘটনায় নিহত হেলাল উদ্দিনের বোন সাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন মুক্তাগাছা থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় পুলিশ হাফিজা খাতুন, আবদুল্লাহ আল মাসুম ও মো. আরমান নামের তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
ময়মনসিংহ আদালতের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের পর হাফিজা খাতুন দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার