বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতির সুযোগ নেই: ইসি সানাউল্লাহ
০৩ ফেব্রু ২০২৫, ০৪:১৭ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
পুরোনো তালিকাকে ভুয়া ভোটার তালিকার বলার সুযোগ ছিল। বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজের তথ্য সংগ্রহকারী, সুপারভাইজার ও নতুন ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে সানাউল্লাহ আরও বলেন, যাদের ভোটার তালিকায় থাকার কথা, তাদের না থাকা এবং যাদের ভোটার তালিকায় থাকার কথা না, তাদের উপস্থিতি—এটাই সমস্যা। বর্তমান পদ্ধতিতে কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে খুব বেশি জালিয়াতি করার সুযোগ নেই। কারণ এটা একটা ডাটাবেজের মাধ্যমে সেন্ট্রালি কন্ট্রোলড হয়, ক্রস টেক করা হয়। মূল সমস্যা হয় যখন মৃত ব্যক্তিদের যথাযথভাবে বাদ না দিতে পারি। এটা যে পুরোটাই প্রতারণামূলক তাও না। আমাদের মানুষ অতটা সচেতন নয় যে, কেউ মারা গেলে অফিসে গিয়ে ফরম পূরণ করে মৃত্যুর সংবাদ দেবে। এটা একটা আমাদের সামাজিক বাস্তবতা।
সানাউল্লাহ বলেন, আমি যেটা অনুভব করেছি যে, সবাই ভোট উৎসবের জন্য মুখিয়ে আছেন। আমাদেরকে এই উৎসাহকে ধারণ করতে হবে। আমরা যদি এটা করতে পারি, অপরাপর যেকোনো সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।
ইসি বলেন, একটি ভালো এবং সুষ্ঠু ভোটের পূর্ব শর্তই হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও নির্ভুল ভোটার তালিকা। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই—প্রথম সভাতেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই, এবারের ভোটার তালিকাটি আমরা হালনাগাদ করব। বাড়ি বাড়ি যাওয়ায় বাধ্যবাধকতা নেই এবং ভবিষ্যতে আর কখনো বাড়ি বাড়ি যাব কি না আমরা জানি না। কারণ এই সেবাটি সারা বছর সব সময় উন্মুক্ত।
তিনি আরও বলেন, আজকে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার দিন শেষ কিন্তু আগামীকাল থেকে যারা এখনো নিবন্ধন করতে পারেননি, তারা যেকোনো সময় অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন। আমরা বোধ করি, আমাদের এই শত চেষ্টার পরও কিছু মানুষ বাইরে থেকে যাবেন। জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যা থাকবে না। অন্যতম যে কারণে আমরা মাঠ পর্যায়ে গেছি, ভোটার তালিকা সম্বন্ধে যেসব কথা বাজারে প্রচলিত আছে সেগুলো থেকে ভোটার তালিকাকে ত্রুটিমুক্ত করা। যেমন ভুয়া ভোটার তালিকা।
নির্বাচন কমিশননির্বাচন কমিশন
ভুয়া ভোটার তালিকা বলতে প্রথম যেটি বোঝায়, সেটি হচ্ছে মৃত ব্যক্তিদের ভোটার তালিকা থেকে কর্তন না করা। আমরা ধারণা করেছিলাম এই সংখ্যাটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা হবে। আমি আজকে পর্যন্ত যে উপাত্ত পাচ্ছি, এক শতাংশ অনেক আগেই অতিক্রম করে গেছে, আমার মনে হয় এটা দুই শতাংশে চলে যেতে পারে। তাহলে আমরা ধরতে পারি, ১৮ থেকে ২৪ লাখ মৃত ভোটার এই তালিকায় ছিল। তাহলে তো এটাকে ভুয়া ভোটার তালিকা বলার সুযোগ ছিলই!’ যোগ করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আরেকটি বিষয় আমাদের ভোটার তালিকাকে বিতর্কিত করে, সেটি হলো দ্বৈত উপস্থিতি। একই এলাকার ভোটার তালিকায় দুইবার উপস্থিতি অথবা দুটি এলাকার ভোটার তালিকায় উপস্থিতি। যদিও এটার সুযোগ অনেক কম।
পুরোনো তালিকায় নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর পর্যন্ত পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার ১৮ লাখ কম ছিল। গত ২ জানুয়ারি আমাদের এই বছরের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এতে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ কম। আমার মনে হয়, নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি হওয়া উচিত ছিল।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 988 বার