বই উৎসব: ভুলত্রুটি কাটিয়ে উঠতে হবে

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

০৩ জানু ২০২৩, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ণ


বই উৎসব: ভুলত্রুটি কাটিয়ে উঠতে হবে

সম্পাদকীয় :
রোববার নতুন বছরের প্রথম দিনটি উদ্ভাসিত হয়েছিল শিক্ষার্থীদের হাসির আলোয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করা হয় এদিন। করোনা মহামারির কারণে দুই বছর পর এ উৎসব হওয়ায় তা একটি ভিন্ন মাত্রা পায়। বই উৎসবের আয়োজন বছরের প্রথম দিনটিতে করা হলেও প্রধানমন্ত্রী ৩১ ডিসেম্বর নিজ কার্যালয়ে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীরা স্বভাবতই আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছে। তবে কাগজ সংকট, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ঘাটতি, দরপত্র প্রক্রিয়ায় বিলম্ব আর দরদাতাদের ধর্মঘটের কারণে মুদ্রণ কাজ শেষ না হওয়ায় শতভাগ বই বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। আমরা আশা করব, চলতি মাসের মধ্যেই বাকি সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, নতুন শ্রেণিতে নতুন বই পাওয়ার আনন্দই অন্যরকম। সে বই যদি বিনামূল্যে পাওয়া যায়, তাহলে তো কথাই নেই। এর মধ্যে এক ধরনের সর্বজনীনতাও রয়েছে। কেননা দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের অনেকেরই নতুন বই কেনার সামর্থ্য থাকে না। তারা আগে পুরোনো বই দিয়েই বছর পার করত। এখন সবার হাতেই নতুন বই। তাই উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিনে পাঠ্যপুস্তক উৎসবে শামিল হয়েছিল। সরকার এবার সারা দেশে প্রায় ৩৩ কোটি ৯০ লাখ পাঠ্যবই বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের বই।

বছরের শুরুতেই এমন বিশাল একটি কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে পারার কৃতিত্ব সংশ্লিষ্টরা দাবি করতে পারেন। এবারসহ কোনো কোনো বছর কিছুসংখ্যক বই প্রকাশে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বটে, তবে উদ্যোগটি যে মহৎ এতে কোনো সন্দেহ নেই। বিভিন্ন সময়ে বিতরণকৃত কিছু বইয়ের বিষয়ে মুদ্রণ বিভ্রাট, পাতা এলোমেলো থাকা, ছাপার মান খারাপ হওয়া ইত্যাদি অভিযোগ উঠেছে। এত বিশাল কর্মযজ্ঞে কিছু ভুলত্রুটি থাকতেই পারে, আসতে পারে বিভিন্ন স্তরে বাধা। কখনো কখনো সংশ্লিষ্টরা ব্যর্থতা ও দুর্নীতিরও পরিচয় দিয়ে থাকে। মনে রাখতে হবে, মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ব্যর্থতা অথবা দুর্নীতির কারণে একটি মহতী উদ্যোগ ভেস্তে যেতে পারে না। এ কার্যক্রমের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে কীভাবে একে সর্বাঙ্গীণ সফল করা যায়, সেদিকেই সরকারের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

আমরা চাই, এ আয়োজন যেন সব সময় সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়। বিনামূল্যে বই প্রদান বিশেষত গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র অভিভাবকদের জন্য একটি বড় স্বস্তির বিষয়। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ সহায়তায় তাদের আর্থিক কষ্টের বোঝা কিছুটা হলেও লাঘব হয়। আমাদের বিশ্বাস, শুধু বিনামূল্যের বই নয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরও অনেক কিছু করার আছে। শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়াসহ শিক্ষাক্ষেত্রের অন্য সমস্যাগুলোর যদি প্রতিকার করা যায়, তাহলে তাদের শিক্ষার ভিতটি শক্তভাবে গড়ে উঠবে, যা একটি জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার