ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা
০৪ নভে ২০২৩, ১২:১৫ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৪ নভেম্বর) উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশে যোগ দেবেন। পরে তিনি সেখানে ভাষণ দেবেন।
এ উপলক্ষে আরামবাগ ইতোমধ্যে মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে মঞ্চ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, আজ উদ্বোধনের পর রোববার (৫ নভেম্বর) থেকে তিন স্টেশন দিয়ে শুরু হবে মেট্রোযাত্রা। প্রাথমিকভাবে উত্তরা পর্যন্ত চলবে চার ঘণ্টা। দশ মিনিট পরপর আসবে ট্রেন।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে উন্নত দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যানজটের নগরীতে যাত্রীদের নতুন অভিজ্ঞতা আর স্বস্তির যাত্রার স্বপ্ন দেখিয়ে মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করেছিল বাংলাদেশ।
জানা গেছে, এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পটি ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাইকার সঙ্গে চুক্তি সই হয়। প্রথমে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের কথা ছিল। যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনায় সেটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে অনুশাসন দেন প্রধানমন্ত্রী। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্ব ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার। বর্তমানে বর্ধিত অংশের অর্থাৎ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণের কাজ চলছে। যদিও নির্মাণকাজের শুরুতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।
জানা গেছে, তিনটি ধাপে এই মেট্রোারেল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণকাজ করা হয়। তৃতীয় ধাপে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলছে। ২০২৫ সালের জুনে এ অংশের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এ অংশের অবকাঠামো নির্মাণের অগ্রগতি ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশন রয়েছে। নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি থাকায় প্রথম পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা চলবে। মতিঝিল থেকে আগারগাঁও অংশে শুধু মতিঝিল, সচিবালয় ও ফার্মগেট—এই তিন স্টেশনে থামবে মেট্রোরেল। প্রতি ১০ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়বে। আপাতত বিজয় সরণি, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে না। তবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত আগের মতো রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে। মেট্রোরেল উত্তরা থেকে পল্লবী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে। এ পথের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এই পথের স্টেশনগুলো হচ্ছে—উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয়সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল। প্রতিটি ট্রেনে ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী ধারণক্ষমতা রয়েছে। সর্বোচ্চ গতি ১০০ কিলোমিটার। উত্তরা থেকে মতিঝিল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। উত্তরা থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ পর্যন্ত ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা এবং আগারগাঁও পর্যন্ত ৬০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও-বিজয়সরণি পর্যন্ত ৬০ টাকা, ফার্মগেট ৭০ টাকা, কাওরান বাজার-শাহবাগ ৮০ টাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ সচিবালয় পর্যন্ত ৯০ টাকা।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 982 বার