০২ ডিসে ২০২৩, ০২:১০ অপরাহ্ণ
অনলাইন ডেস্ক:
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বাংলা অর্থ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বর্তমানে আমাদের চারপাশে অনিয়ন্ত্রিতভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হচ্ছে। আর এই ব্যবহার আমাদের সমাজ বা পরিবেশকে আরও আধুনিক হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন হয়ে উঠেছে একটি একাডেমিক শিক্ষার ক্ষেত্র যেখানে পড়ানো হয় কীভাবে বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করবে এমন কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার তৈরি করতে হয়।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অব মাল্টিমিডিয়া এবং ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) তাদের কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করে এবং বর্তমানে ছাত্রছাত্রীরা এআই ব্যবহার করে উদ্ভাবনী প্রয়োগের এগিয়ে আছে। ডিপার্টমেন্ট অব মাল্টিমিডিয়া এবং ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) বর্তমানে বাংলাদেশে একমাত্র ডিপার্টমেন্ট যারা গ্রাফিক ডিজাইন, থ্রিডি মডেলিং, অ্যানিমেশন, গেম ডেভেলপমেন্টে ৪ বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান করে। উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে ডিপার্টমেন্ট অব মাল্টিমিডিয়া এবং ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) ছাত্র-ছাত্রীরা নানা রকম উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
কারিকুলামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাস্তবায়ন
“AI Shaping Tomorrow’s Creators: AI Integration in Multimedia Discover the magic where concepts come to life”-এর ব্যানারে ডিপার্টমেন্ট অফ মাল্টিমিডিয়া এবং ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) সক্রিয়ভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর রূপান্তরমূলক সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াচ্ছে৷ এই উদ্যোগটি গ্রাফিক ডিজাইন, মোশন গ্রাফিক্স, 3D মডেলিং, 3D অ্যানিমেশন, ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস, গেম ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, AR/VR এবং ফিল্ম মিডিয়া সহ বিস্তৃত কোর্সগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে। এই কোর্সগুলিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স একীভূত করার মাধ্যমে, বিভাগটি তার ছাত্রছাত্রীদের সীমাহীন সৃজনশীলতা উদ্ঘাটন করার লক্ষ্য রাখে।
উদ্ভাবনী গবেষণা
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট বর্তমানে কম্পিউটার বা ভিডিও গেমসের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করে এই গেমের ক্যারেক্টারগুলোকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রদান করা হয়। যার ফলে গেমসের ক্যারেক্টারগুলো গেম ব্যবহারকারীদের চিন্তাও কার্যক্রমের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদন করে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো কল্পনা বা কল্পনা বাস্তবতা। এটি প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় তবে বাস্তবের মতো চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞানের কল্পনা বা কল্পনা বাস্তবতা। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এটি মূলত কম্পিউটার প্রযুক্তি ও সিমুলেশন তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। ডিপার্টমেন্ট অফ মাল্টিমিডিয়া এবং ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) ছাত্রছাত্রীরা ইতিমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে “এআই প্রফেসর” নামে একটা প্লাটফর্ম তৈরি করেছে যেখানে একজন ছাত্রছাত্রী ভার্চুয়ালি একজন প্রফেসারের পুরোপুরি সাহায্য নিতে পারবে৷ এই বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা এর আগেও করোনাকালীন সময়ে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম, ভার্চুয়াল ক্যাম্পাস ভ্রমণ ও ভার্চুয়াল মেলা পরিচালনা করার জন্য ভার্চুয়াল গেইট নামক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাজস্ব নিয়ে আসে৷
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে পুরা পৃথিবী ব্যাপকভাবে থ্রিডি প্রিন্টিং এর ওপর নির্ভর করবে। থ্রিডি প্রিন্টিং এর সুবিধা হল এই পদ্ধতিতে অনেক ধরনের কাঠামো প্রিন্ট করা যায় এবং পণ্য নকশা করাও সহজ। এছাড়াও এটি তুলনামূলকভাবে পরিবেশবান্ধব। স্বল্প পরিমাণে উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই পদ্বতিতে লীড টাইম এবং মোট উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে সক্ষম। মাল্টিমিডিয়া এবং ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) ডিপার্টমেন্টের দুই শিক্ষার্থী, মোঃ অলিক আকন্দ (এমসিটি ব্যাচ ২৫) এবং মো. রাহাতুল আকন্দ (এমসিটি ব্যাচ ১৪) 3D প্রিন্টার ব্যবহার করে সফলভাবে একটি ৮” নিউটনিয়ান টেলিস্কোপ তৈরি করে৷ এই টেলিস্কোপ এর বাজার মূল্য এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার কিন্তু থ্রিডি প্রিন্টিং টেকনোলজি ব্যবহার করে খরচ পড়েছে মাত্র পঁয়ত্রিশ হাজার।
ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়া কোলাবোরেশন
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট এবং মেটাভার্সের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে স্বীকৃতি দিয়ে, মাল্টিমিডিয়া এবং ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) ডিপার্টমেন্ট ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২-এ একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়। বিভাগটি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর অধীনে নয়টি প্রতিশ্রুতিশীল বাংলাদেশী কোম্পানির সাথে হাত মিলিয়েছে। এই সহযোগিতার লক্ষ্য হল উদ্ভাবনী উদ্যোক্তাদের মেটাভার্স, এআই, গেমিং এবং এনএফটি স্পেস-এ ফোকাস করে শিল্পের নেতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন ও একসাথে যৌথভাবে কাজ করে ছাত্রছাত্রীদের ইন্ডাস্ট্রি ওরিয়েন্টেড শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এমসিটি বিভাগ শুধু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে না; এটি সৃজনশীল শিক্ষার সাথে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্টকে একীভূত করার পথে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি এমসিটি বিভাগকে বিশ্বব্যাপী সম্ভাবনাময় অবস্থানে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার