হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য ও সকল সহযোগীর বিচার হবে

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

০৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ


হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য ও সকল সহযোগীর বিচার হবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশপাশি অপরাধের সঙ্গে জড়িত হাসিনার পরিবারের সদস্য ও সহযোগীদেরও বিচার হবে বলেও জানান তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি স্থানীয় সময় বুধবার (৫ মার্চ) প্রচারিত হয়।

সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।

তিনি বলেন, ‘বিচার হবে। শুধু তার (হাসিনা) নয়, তার সাথে জড়িত সকল লোক — তার পরিবারের সদস্য, তার ক্লায়েন্ট বা সহযোগীদেরও। ’

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার প্রমাণ সরকারের কাছে আছে। কিন্তু তিনি বাংলাদেশে শারীরিকভাবে উপস্থিত নেই। তাই প্রশ্ন হলো আমরা কী তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে পারব কি না- এটি নির্ভর করছে ভারতের উপর এবং আন্তর্জাতিক আইনের নির্দেশনার ওপর। ’

ড. ইউনূস আরও বলেন, তাকে ফেরত দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের জবাবের অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ।

সম্প্রতি ‘হাউস অফ মিররস’ বা আয়নাঘর নামক কুখ্যাত গোপন কারাগারগুলোর মধ্যে একটি পরিদর্শন করেছেন ড. ইউনূস। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আয়নাঘরগুলো যখন আপনি (সাংবাদিক) নিজের চোখে দেখবেন এবং নির্যাতিতদের সঙ্গে কথা বলবেন, তখন বুঝতে পারবেন যে, কতটা ভয়ঙ্কর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। আয়নাঘরগুলো সেনাবাহিনীর আওতাধীন। তাই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। তবে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, এগুলো জাদুঘরে রূপান্তরিত করার। যাতে জনগণ সেখানে আসতে পারে এবং ইতিহাস জানতে পারে। ’

হাসিনার বিরুদ্ধে তার নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশকে ব্যবহার করে শত শত নেতাকর্মীকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার তদারকি করার অভিযোগ রয়েছে। হাসিনা, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং প্রায় ৮০০ গোপন কারাগারের নেটওয়ার্ক তদারকি করার দায়ে অভিযুক্তদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অভিযুক্ত অপরাধের সাথে জড়িত লোকের সংখ্যা এবং পরিসর (বেশি হওয়ায়) কাজ করতে ‘সময় লাগছে’।

তিনি বলেন, ‘সবাই এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। পুরো সরকার এর সাথে জড়িত ছিল। সুতরাং এটা বের করা কঠিন যে— কারা সত্যিই এবং উৎসাহের সাথে এই অপরাধগুলো করছিল, আর কারা উচ্চপদস্থদের আদেশের অধীনে এসব কাজ করেছিল এবং কারা পুরোপুরি এসব অপরাধের সমর্থনকারী না হলেও এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছিল। ’

ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। নাটকীয় এই পটপরিবর্তনের পর একে একে বের হয়ে আসছে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নানা চিত্র।

শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশ ছেড়ে পলায়নের পর তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ বের হয়ে আসছে এবং দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তাদের একজন শেখ হাসিনার ভাগ্নি সাবেক ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর গত জানুয়ারি মাসে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলাটি খুবই গুরুতর। দেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এবং সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 986 বার