সিলেট সীমান্তে বেড়েছে হত্যা নেপথ্যে চোরাকারবার

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

১৩ মার্চ ২০২৫, ০২:২৬ অপরাহ্ণ


সিলেট সীমান্তে বেড়েছে হত্যা নেপথ্যে চোরাকারবার

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট সীমান্তে বেড়েছে হত্যা। ভারতীয় খাসিয়াদের হাতে প্রায় প্রতি মাসেই একাধিক বাংলাদেশি নাগরিক প্রাণ হারাচ্ছেন। বেশির ভাগ হত্যাকাে র ঘটনা ঘটছে ভারত সীমান্তের ভিতরে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চোরকারবারের বিরোধ নিয়েই ঘটছে এসব হত্যাকাণ্ড। ভারতের ভিতরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় এসব ঘটনায় বাংলাদেশে কোনো মামলাও হয় না। অনাকাঙ্খিত এসব ঘটনা বন্ধে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো ও চোরাচালান বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

সীমান্ত সূত্র জানায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাটের চোরাকারবারিরা সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়াদের নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে তারা ভারত থেকে গরু, মহিষ, শাড়ি, থান কাপড়, কসমেটিক্স, গরম মসলা, চিনি, কমলা, আপেল ও সুপারিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও পশু নিয়ে আসে। আর বাংলাদেশ থেকে পাচার করা হয় শিং মাছ ও রসুন। অবৈধ এই কারাবারের লেনদেন হয়ে থাকে হুন্ডির মাধ্যমে। অনেক সময় লেনদেন নিয়ে দুই দেশের সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। টাকা দিয়ে পণ্য না দেওয়া, কিংবা পণ্য এনে মূল্য পরিশোধ না করা নিয়ে দুই দেশের চোরাকারবারিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এ ছাড়া এক গ্রুপের পাওনা টাকা না দিয়ে অন্য গ্রুপের কাছ থেকে পণ্য আনা নিয়েও দেখা দেয় বিরোধ। সূত্র আরও জানায়, যখন দুই দেশের চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় তখন বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের আটক করে ভারতীয় খাসিয়ারা। কখনো মারধর করে আবার কখনো গুলি করে হত্যা করে তাদের। আর বাংলাদেশিরা কৌশলে ভারতীয় চোরাকারবারিদের ডেকে এনে আটক করে মুক্তিপণ আদায় করে।

সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারত গিয়ে সর্বশেষ গত ৬ মার্চ প্রাণ হারান কানাইঘাট উপজেলার মঙ্গলপুর গ্রামের মশাহিদ আলীর ছেলে শাহেদ মিয়া। ভারত থেকে চিনি আনতে গিয়ে খাসিয়াদের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। সিলেট জেলা ছাড়াও বিভাগের অন্য তিন জেলার সীমান্তেও ঘটছে প্রাণহানীর ঘটনা। সূত্র জানায়, ২০২৪ সালে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সীমান্তে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৮ বাংলাদেশি। কিন্তু চলতি বছরের প্রায় আড়াই মাসে বিএসএফ ও ভারতীয় খাসিয়াদের হাতে মারা গেছেন পাঁচজন।

বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হক জানান, সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর কিছু লোক পেশা হিসেবে চোরাচালান বেছে নিয়েছে। জনসচেতনতার পাশাপাশি অভিযান চালিয়েও তাদের এই পথ থেকে ফেরানো যাচ্ছে না। চোরাকারবারিরা অবৈধভাবে ভারত গিয়ে অনেক সময় খাসিয়াদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায়। তখন খাসিয়াদের হাতে প্রাণ হারাতে হচ্ছে তাদের।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 983 বার