শ্বশুরবাড়ি থেকে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

১৭ জানু ২০২৩, ০১:৪২ অপরাহ্ণ


শ্বশুরবাড়ি থেকে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিয়ের ৫ মাসের মাথায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে হারুনুর রশিদ হারুন (৩২) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোররাতে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের মাইচ্ছাখালি ব্রিজ এলাকার শ্বশুরবাড়ির পাশের বাগান থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হারুনের শাশুড়ি খুকি বেগম ও স্ত্রী বৈশাখী বেগমকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হারুনের শ্বশুর মনছুর আহমেদ ও ভায়রা ভাই জুয়েল ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন।

নিহত হারুন সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের নবীগঞ্জ বাজার এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে। তিনি পেশায় কসাই ও মাংস ব্যবসায়ী। হারুনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চেয়েছেন।

হারুনের ভাই রিয়াজ হোসেন ও বোন জোৎস্না বেগম জানান, তাদের ভাবি বৈশাখীর বিয়ের আগে প্রেম ছিল। বিয়ের পরেও তিনি প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলতেন। এ নিয়ে প্রায়ই হারুনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হতো। সোমবার রাতে হারুনকে তার ভায়রা ভাই জুয়েল শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। রাত ৩টার দিকে খবর আসে হারুন আত্মহত্যা করেছে। এটি আত্মহত্যা নয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

হারুনের পরিবারের লোকজন জানায়, প্রায় ৫ মাস আগে পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের মনছুর আহমেদের মেয়ে বৈশাখীর সঙ্গে হারুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পরই জানা যায় বৈশাখীর অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেম রয়েছে। বৈশাখী নিয়মিত ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলতো। এ নিয়ে হারুন ও বৈশাখীর মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হত। এসব কারণে কয়েকদিন আগে বৈশাখী তাদের বাড়িতে চলে যায়। সোমবার রাতে হারুনকে বৈশাখীর বোনের জামাই শ্বশুর বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রভাবিত করতে বাড়ির পাশের বাগানে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে। এটি পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছেন হারুনের পরিবার।

তবে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় তিনজন বাসিন্দা জানায়, হারুনের বয়সের তুলনায় বৈশাখীর বয়স অনেক কম। প্রাপ্ত বয়স না হলেও তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় তার বয়স ১৫-১৬ বছর ছিল। এতে স্বামীর সঙ্গে তার সামঞ্জস্যতা ছিল না। এ নিয়েই মেয়েটি রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে আসে।

হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) মফিজ উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের কপালে জখম রয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছে হারুন নিজেই বরই গাছের সঙ্গে আঘাত করে কপালে জখম করেছে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার