লন্ডনে ঘর নিয়ে চরম দুর্ভোগে সিলেটিরাি
১৭ ফেব্রু ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
নিউজ ডেস্ক:
‘দ্বিতীয় লন্ডন’ সিলেট। সিলেটি প্রবাসীদের আধিক্যের কারণে সিলেটকে দ্বিতীয় লন্ডন বলা হয়। করোনা পরবর্তী সময়ে দেশটিতে এডুকেশন ভিসায় ও ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে সিলেট থেকে হাজার হাজার সিলেটী দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন। অনেকেই গেছেন পরিবার নিয়ে। তবে যারা গেছেন তাদের জন্য নতুন দুর্ভোগের নাম হয়ে দাড়িয়েছে বাসা ভাড়া পাওয়া!
যুক্তরাজ্যে জাতিগোষ্ঠী হিসেবে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা সবচেয়ে গিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ বাংলাদেশি খুবই সংকটময় পরিস্থিতিতে বাস করছেন। এরমধ্যে উল্লেখ্যযোগ সংখ্যাক রয়েছেন সিলেটী। যা ২৩ শতাংশ বলে এক সমীক্ষার ফলাফলে উঠে এসেছে।
জানাগেছে, ব্রিটেনে আবাসন সমস্যা নতুন ঘটনা নয়। গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বেড়েছে কয়েক গুণ। মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাড়ির মর্টগেজের মাসিক কিস্তি দ্বিগুণ হয়েছে অনেকের, জীবনযাপনের সব ধরনের ব্যয়ে নাজেহাল সবাই, তার ওপর আবাসিক সংকটের সমাধান না পাওয়ায় পরিবারের ভোগান্তি এখন চরমে। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ও কেয়ার ভিসায় আসা মানুষরা পার করছেন আরও চরম দুঃসময়।
সম্প্রতি ওএনএস (অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস) এক জরিপের ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, লন্ডনের কাউন্সিলগুলোয় বসবাসকারী বাংলাদেশিরা দেশটির অন্য এথনিক মাইনরিটি কমিউনিটির চেয়ে বেশি দুর্ভোগে আছেন। বছরের পর বছর ধরে এ সমস্যা নিয়ে ভুগছেন কয়েক লাখ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে বসবাস করেন সিলেটের এক নারী আড়াই বছর ধরে নিজ কাউন্সিলের বাইরে এক রুমের ভেতরে দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন।
তিনি বলেন, এখানে নানা সমস্যায় জর্জরিত আমরা। ওয়াশরুম শেয়ার করতে হয়, রুমে হিটিং ঠিকমতো চলে না, দেয়াল স্যাঁতসেঁতে। আমার দুই সন্তান একটি দোতলা খাটে ঘুমায়। মালামাল সব বাইরে মাসিক ভাড়ার স্টোরেজে রাখি। কবে স্থায়ী ঘর পাবো, আদৌ পাবো কি না, তা জানি না।
জরিপে আরও দেখা গেছে, সাধারণত কাউন্সিলের (বারা) ঘরের জন্য পরিবারকে আবেদন করতে হয়। কিন্তু একটি ঘর পেতে অপেক্ষমাণ তালিকায় কেটে যায় ১০ বছর। তবু মিলছে না সুযোগ। এ ছাড়া অনেকে হোস্টেলে বসবাস করেন। সেখানে রান্নার ব্যবস্থা নেই আবার একটি ওয়াশরুম ব্যবহার করতে হয় ১০ জনকে মিলে।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি আবাসন পরামর্শকরা বলছেন, বেশির ভাগ বাংলাদেশি ব্রিটেনে কম বেতনে চাকরি করেন। তাই তাদের ওপর আবাসন সংকটের প্রভাব মারাত্মক। প্রাইভেট রেন্টেড ঘরের ক্ষেত্রে ভাড়া কয়েক গুণ বেশি।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর অহিদ আহমদ বলেন, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ও কাউন্সিল টেক্সের অব্যাহত বৃদ্ধি জনজীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। আবাসন সংকট মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার