মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সেই গৃহকর্মী গ্রেপ্তার

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

১০ ডিসে ২০২৫, ১২:৫২ অপরাহ্ণ


মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সেই গৃহকর্মী গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি ফ্ল্যাটে মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, বরিশালের নলছিটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে এই জোড়া খুনের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন গৃহকর্মী আয়েশাকে শনাক্ত করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তরুণীর পরিচয় শনাক্ত হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা গ্রেপ্তারের পর প্রকাশ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদেই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে তদন্তসংশ্লিষ্টদের ধারণা।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এই জোড়া হত্যার ঘটনায় সোমবার রাতে নিহত লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৭টার দিকে আজিজুল ইসলাম স্কুলে যাওয়ার পর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বাসায় ফিরে তিনি স্ত্রী ও মেয়ের লাশ দেখতে পান। এজাহারে আরও উল্লেখ আছে, বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া গেছে।

ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হত্যার পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া প্রায় ২০ বছর বয়সী এই তরুণীকে জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করছেন স্বজনেরা। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে পালিয়ে যান।

তদন্তসূত্র বলছে, গৃহকর্মী নিজের আসল নাম ও ঠিকানা গোপন করেছিলেন এবং বাসার কাজে যোগ দেওয়ার সময় সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোনও ছিল না। পরে যে ফোনটি নিয়ে গেছেন, সেটি বাসা থেকে বেরিয়েই বন্ধ করেন। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার বেশির ভাগই অচল থাকায় তাকে শনাক্ত করতে ম্যানুয়ালভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়েছে। তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানিয়েছেন, গৃহকর্মীর দেওয়া নাম-ঠিকানা ভুল হওয়ায় শুরুতে তার পরিচয় নিশ্চিত করা কঠিন ছিল।

সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি এবং নাফিসার দেহে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, হত্যার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে মা-মেয়ের মরদেহ নাটোরে পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নেওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 991 বার