“মজলুম শিক্ষকদের আহাজারি কি শুনার কেহ নেই ? শুনবেই বা কেন ?

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

৩১ জুলা ২০২৩, ০৩:২২ অপরাহ্ণ


“মজলুম শিক্ষকদের আহাজারি কি শুনার কেহ নেই ? শুনবেই বা কেন ?

এডভোকেট মোঃ আমান উদ্দিন:
প্রবাদ আছে “শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড”। মেরুদন্ডহীন প্রানী সোজা হয়ে দাড়াঁতে পারে না। শিক্ষাবিহীন জাতি ও শিক্ষা ব্যতিত মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারে না। কিয়ামত কি নিকটবর্তী হয়ে গেল ? মুর্খরা দেশ শাসন করবে, উপদেশ দিবে, এবং তাদের আদেশ নিষেধ পালন করবে শিক্ষাবিদরা। বসবেন দর্শকের আসনে। বাজারে দ্রব্য মূল্যের অসহনীয় যন্ত্রনা। হু হু করে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়তেই আছে। দেখার তো কেউ নেই ? ধরুন মাধ্যমিক (বেসরকারী) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ভেতন উনত্রিশ হাজার পাচঁশত টাকা। এর মধ্যে কাটছাট করে টাকা উত্তলন করতে পারেন মাত্র পঁচিশ হাজার টাকা। প্রধান শিক্ষকের সাকুল্য টাকা যদি এই হয়, তাহলে সহকারি শিক্ষকদের অবস্থা কেমন হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একজন শিক্ষক হতে হলে তাকে এস.এস.সি, এইচ.এস.সি, বি.এ, বি এড, এম.এড ইত্যাদি ডিগ্রি অর্জন করতেই হবে। তাও আবার তৃতীয় শ্রেনী পাশ হলে চলবে না । বি.সি.এস এর আদলে ইনডেক্স পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হয়।

 

 

ইনডেক্সের অন্তভুক্ত হলেই চাকুরী পাবেন এ কথা নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই। সুবিধা হলে শুন্য পদে সরকার নিয়োগের ব্যবস্থা করবেন। প্রতিষ্টানে যোগদানের পর এম.পি ও ভুক্ত হতে হলে জাহাঙ্গীর (ডিডি) কে সন্তুষ্ট করতেই হবে। তাকে নূন্যতম ৫০/৬০ হাজার টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে হবে। নতুবা এমপিও ভুক্ত হওয়া যেকোনো শিক্ষকের ক্ষেত্রে কষ্টকর হবে।

 

 

ঘরে ঘরে শিক্ষিত জাতি গড়তে হলে, অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়োগদানের ব্যবস্থা করতে হবে। একজন সু-শিক্ষায় শিক্ষিত লোক পরিবারে থাকলে গোটা পরিবার আদর্শ ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সমাজ ব্যবস্থার আশির্বাদ হয়ে দেশ, জাতি গঠনে প্রসংশনীয় ভূমিকা রাখতে পারবে। কেননা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলে সে কিন্তু কোনো অন্যায় অত্যাচার করবে না। তাহার পক্ষে চুরি চামারি,ব্যভিচারী দুবৃত্ত পরায়ন হওয়া থেকে বিরক থাকবে। কারন তার মধ্যে লজ্জাবোধ জন্ম গ্রহন করতে সক্ষম হয়েছে। সে কখন ও অন্যায় করতে পারবে না। কারন সে সু-শিক্ষিত।

 

সু-শিক্ষিত করবে কে ? করবেন বিশ^বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় নিয়োগদানের ব্যবস্থা করতে হবে। উনত্রিশ হাজার পাঁচশত টাকায় কি মেধা সম্পূর্ন শিক্ষক আসবে এই পেশায়। না, কখন ও না। তাদেরকে মেধার ক্রম অনুসারে প্রথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বা বিশ^ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দানের ব্যবস্থা করতে হবে। যেমনটি উন্নত বিশে^র উন্নত জাতি গঠনে স্বিকৃতি পেয়েছেন শিক্ষক সমাজ। আর এই সমাজের কারিগর এসব প্রাজ্ঞ শিক্ষাবিদরা। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে এসব মেধাবিদেরই নিযোগ দেওয়া সময়ের দাবী। তাদের দ্বারাই একমাত্র স্বচ্ছ, সৎ, কর্মট, সমাজ গঠন সম্ভব। থাকবে না কোন অন্যায়, অভিচার। কারন এসব মেধা সম্পূর্ন শিক্ষক তাদেরই প্রশিক্ষিত শিক্ষিত ছাত্ররাই হবেন রাজনীতিবিদ। এসব শিক্ষাবিদরা কোন দিন কোন অন্যয় কাজে জড়াতে পারবে না। সমাজে ব্যভিচার বলতে কিছুই থাকবে না। হউক সে প্রশাসনের বড় কর্তাব্যক্তি। আর এসব ফলাফল পেতে হলে অচিরেই শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল সংস্কারের প্রয়োজন। বিশে^র কোথাও কি শিক্ষকদের বেতন-ভাতার জন্য রোধ বৃষ্টির মধ্যে দাড়িয়ে অধিকার বাস্তবায়ন করতে কি দেখেছেন? আমার ৫৩ বৎসর বয়সে দেখিনি। জীবনে কখন ও বিশে^র ইতিহাসে পর্যালোচনা করে আমি কোথাও বাইনকোলার দিয়ে দেখতে পাইনি। দেখার সম্ভাবনা ও নেই। কারন উন্নত দেশ শিক্ষকদের মূল্যযন করতে শিখেছে। শিক্ষকদের সরকারের দালালী করতে দেখিনি। কারন তারা সু-শিক্ষায শিক্ষিত। জাতি ঘটনে আদর্শ মানুষ তৈরি করে দেশ পরিচালক বানিয়েছেন।

 

রাজনীতিতে এসব শিক্ষকদের আদর্শে গড়া লোকদের স্থান দিতে হবে। হালের রাজনীতিতে অশিক্ষিত, গুন্ডা, মূর্খ্য, কালোবাজারিদের হাতে জিন্মি। তাদের মধ্যে হাতে গুনা ৪/৫ শতাংশ লোক সুশিক্ষায় শিক্ষিত। এসব অপ: রাজনীতিবিদদের বয়কট করতে হবে।

 

এসব দুবৃত্ত, গুন্ডা, পান্ডা, চোর, ডাকাত, সুদখোর, ঘোষখোর, নেশাখোর, উপযুক্ত শিক্ষকদের মূল্যয়নের মাধ্যমে তাদেরকে রাস্তাঘাটের শৃঙ্খলা বা ট্রাফিক যানজট নিরসনের জন্য নিয়োগের সুব্যবস্থা করা যাইতে পারে। আর তাদের এসি আর দিবেন মানুষ গড়ার কারিগর আদর্শ শিক্ষকরাই। আদর্শ শিক্ষকরা যেকোনো অন্যয় কাজের প্রতিবাদ করা শিখতে হবে। প্রতিবন্ধির তালিকা থেকে বেরিয়ে আন্দোলন কারী শিক্ষকদের সাথে একাত্মতা পোষন করতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মরা যাতে আর বেতন ভাতার আন্দোলন করতে না হয়। তাহার সুব্যবস্থা করতে হবে। কারণ শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। এ কথাটি বুঝাতে শিখুন। সুশিক্ষায় শিক্ষিত আদশের্র প্রতীক “বাদশা আলমগীর”। দালাল টাউট বাটপারদের শিক্ষকতা পেশায় না আসাই ভালো। চাটুকারীতা বন্ধ করুন। ভাবতে শিখুন আপনি আদর্শ শিক্ষক। এর বাইরে আপনার অন্য কোন পরিচয় নেই। “বাদশা আলমীর” শিক্ষককে মর্যাদা দিতে গিয়ে তার নিজ ছেলেকে কঠিন শাসন করেছেন। শিক্ষক বাদশা আলমগীরের মহানুভবতা দেখে শিক্ষকদের উদ্দেশ্য বলেন “আজ হতে চীর উন্নত হল শিক্ষাগুরুর শির, নিশ্চয়ই তুমি মহান উদার বাদশা আলমগীর”।

লেখক- সভাপতি সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)বিয়ানীবাজার, সিলেট।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার