ভোটের মাধ্যমেই সিলেটে হচ্ছে ছাত্রদলের কমিটি

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

০৪ মার্চ ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ


ভোটের মাধ্যমেই সিলেটে হচ্ছে ছাত্রদলের কমিটি

স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সরব হয়ে উঠেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কার্যক্রম।পাঁচ আগস্টের পর থেকে প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যেন ফিরে পেয়েছে হারানো জৌলুস।পট-পরিবর্তনের আগে অনেক ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কমিটি থাকলেও বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দাপটে কার্যক্রম করা ছিল কঠিন। পাঁচ আগস্টের পর বদলে গেছে ক্যাম্পাসের ছাত্র রাজনীতির চিরচেনা চিত্র। গেল দুই সপ্তাহে সিলেটের বিভিন্ন কলেজ-মাদ্রাসায় ছাত্রদলের ৬০টি কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে জেলা ছাত্রদলের অধীনে ৪৩টি আর মহানগর শাখার অধীনে ১৭টি কমিটি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরো ২৯টি কমিটির চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে দলীয় সুত্র জানিয়েছে।

ছাত্রদল সুত্র জানায়, পট পরিবর্তনের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান শিক্ষাঙ্গন ও ছাত্রদলকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখেন। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতাদের দিয়ে টিম গঠন করে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করেন। সাম্য এবং মানবিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে গেল নভেম্বর_ডিসেম্বর মাসে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাঠানো হয় ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে।বাদ যায়নি সিলেটও।সিলেট জেলা, মহানগর ও সুনামগঞ্জের দায়িত্ব দেয়া হয় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম কারদি, মওদুদ আহমদকে।সাম্য এবং মানবিক বাংলাদেশ গড়ার দাওয়াত ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রশিক্ষিত টিম।

এ দাওয়াত শেষ হয়ে না হতেই শুরু হয় ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান কার্যক্রম। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতেই সিলেটে পূণরায় আসে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ঐ তিন সদস্যের সাংগঠনিক টিম। সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রতিটি ক্যাম্পাসে শুরু হয় সদস্য সংগ্রহ অভিযান। এ কার্যক্রম সফল করতে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতাদের দিয়ে করা হয় ১৩টি সাংগঠনিক টিম। সদস্য ফরম বিতরণ ও পূরণ কার্যক্রম শেষে যাচাইবাছাই করে শুরু হয় ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কাউন্সিল।এর আগে ২০২০ সালে ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ অভিযান করা হয়েছিল সিলেটে।

গেল ২৫ ফেব্রুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ, ইছামতি ডিগ্রি কলেজ ও দক্ষিণ সুরমা কলেজ থেকে শুরু হয় ছাত্রদলের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল কার্যক্রম। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে কর্মীরা নেতৃত্ব বাছাই করার সুযোগ পান।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, ‘দলে আগেও ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ক্যাম্পাসগুলোতে কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি, কারন গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছিল না দেশে। একটি অগণতান্ত্রিক সরকার ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল হয়েছে এবং ভোটের মাধ্যমে কর্মীরা তাদের নেতা নির্বাচন করছে।

ছাত্রদল সুত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলার অধীনে এখন পর্যন্ত ৪৩টি কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি সাংগঠনিক ইউনিট এবং কয়েকটি কলেজ-মাদ্রাসা রয়েছে।তবে শুধু মাত্র সাংগঠনিক ইউনিটে কাউন্সিল হচ্ছে। বাকিগুলোতে যাচাইবাছাই করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলার অধীনে আরো ২২টি কমিটি করার প্রস্তুতি হাতে নিয়েছে জেলা ছাত্রদল। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দিলওয়ার হোসেন দিনার জানান, ৮টি সাংগঠনিক ইউনিটে (কলেজ) দ্রুত কাউন্সিল করা হবে। বাকিগুলোতে দ্রুত কমিটি দেওয়ার লক্ষ্যে যাচাইবাছাইয়ের কাজ চলছে।

এদিকে মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে আহসান রাব্বী জানিয়েছেন, সিলেট মহানগরের অধীনে ইতিমধ্যে ১৭টি কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। এরমধ্যে কাউন্সিল হয়েছে দক্ষিণ সুরমা কলেজে। কমিটি গঠন ও কাউন্সিলের প্রস্তুতি রয়েছে আরো ৭টির। এরমধ্যে এমসি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, মদন মোহন কলেজ, সিলেট ‘ল’ কলেজ সহ ৭টি ইউনিটের কমিটি বাকি রয়েছে।

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম কারদি জানান, ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জে শুরু হয়েছে দলের এ কারযক্রম। ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জে ছাত্রদলের দুটি কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে কেবল ছাত্রদের দিয়েই কমিটি দেয়ার কারণে উপজেলা ও পৌরসভার নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে কাদের দিয়ে উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের কমিটি করা হবে। এ প্রশ্নের উত্তর জানতে একাধিক কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতাদের সাথে আলাপ হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, এ ব্যাপারে এখনো কোণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে সবে মাত্র যাদের ছাত্রতব শেষ হয়েছে তাদের কমিটিতে স্থানব পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 983 বার