ভালবাসা দিবসে শিমুল ফুল নজর কাড়ছে
১৪ ফেব্রু ২০২৩, ০২:১১ অপরাহ্ণ
আবুল হাছান :
ভালবাসা দিবসে যাদুকাটা নদীর তীরে ঋতুরাজ বসন্তে শিমুল ফুল পর্যটকদের নজর কাড়ছে। গাছে গাছে ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য তীব্র শীত পেরিয়ে ফুলে ফুলে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটেছে। যেন উদাসী মনে আকাশ পানে ছেয়ে আছে সদ্য ফোটা লাল শিমুল ফুল।
বাগানের চারদিকে রক্তরাঙ্গা ফুলগুলো ভালবাসা দিবসকে স্বাগত জানিয়ে অপরুপ দৃষ্টিতে থাকিয়ে আছে। আর এসব ফুল দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন এখানে পর্যটকরা। বসন্তের রঙ্গের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাগান পরিচর্যার সঙ্গে জড়িতরাও এখন আনন্দে মেতে উঠেছে। বছর ঘুরে এবার শিমুল ফুলগুলো নতুন রূপে সেজেছে।
বাগানে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি গাছে ফুটে থাকা লাল পাঁপড়ি দেখে পর্যটকদের মনে আনন্দের ঢেউ উঠেছে। জমে উঠেছে শিমুল মায়ার খেলা। ভালবাসা দিবস উপলক্ষে গাছে গাছে লাল ফুলের গালিচা দেখতে অসংখ্য পর্যটকরা বাগানে ভিড় করছে। এবার ফেব্রুয়ারির শুরুতেই শিমুল ফুল ফুটে সৌন্দর্য্য দিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর তীর ঘেষে বারেকটিলার সংলগ্ন প্রায় শত বিঘা জমিজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল এক জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান। নদীর ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়, মাঝে রুপের নদী যাদুকাটা আর এপারে রক্তিম ফুলের সমারোহ। ২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান বৃক্ষপ্রেমী জয়নাল আবেদীন নিজের ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে শৌখিনতার বসে তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণ করেন। দিনে দিনে বেড়ে ওঠা শিমুল গাছগুলো এখন হয়ে উঠেছে শিমুল বাগান। বসন্তে শিমুল গাছগুলোতে ফুলে ফুলে ভরে ওঠেছে। ফাগুনের অরুণ আলোয় ফুটেছে শিমুল ফুল। চোখের তৃষ্ণা মেটাতে টাঙ্গুয়ার হাওর, মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে, রূপের নদী যাদুকাটার তীরে বৃহৎ শিমুল বাগানে ফুটেছে লাল ফুল। আর লাল টুকটুকে ফুল দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন হাজারো পর্যটক।
সিলেট থেকে বাগান দেখতে আসা মায়া ও মেহেরিন জানান, দেশে এতো বড় শিমুল বাগান দেখে তাঁরা আন্দদিত। তারা সঠিক সময়ে ফুলের পাঁপড়ি দেখতে পেয়ে তাদের মণ আনন্দে ভরে গেছে। তারা বলেন, এখানকার রাস্তাঘাট উন্নত হলে এখানে আসা পর্যটকদের কষ্ট একটু কম হবে এবং পর্যটকপ্রেমীদের সমাগম আরও বাড়বে।
বাগানের মালিক প্রয়াত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের ছেলে আফতার উদ্দিন জানান, এবারই সঠিক সময়ে বসন্তে শিমুল ফুল ফুটেছে। এই শিমুল বাগান তার মরহুম পিতার পরিচয় আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, এখানে আসা পর্যটকদের সুবিধার জন্য একটি শিমুল বাগান কেন্টিন ও ওয়াসরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কীভাবে যাবেন: শিমুল বাগান দেখতে চাইলে প্রথমে ঢাকা সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসযোগে সুনামগঞ্জের প্রবেশদ্বার আবদুজ জহুর সেতুতে নামতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে মহাখালী থেকেও বাসে আসতে পারবেন সুনামগঞ্জে। এসব বাসে ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৭শ’ টাকা। আর যারা সিলেট থেকে আসবেন তারা সিলেট কুমারখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সহজে সুনামগঞ্জ নেমে পড়বেন। ভাড়া নেবে জনপ্রতি ১৫০শ’ টাকা। আবদুজ জহুর সেতু থেকে সিএনজি, মোটরসাইকেল কিংবা যেকোনো গাড়ি দিয়ে তাহিরপুর লাউড়ের গড়বাজার অথবা বিন্নাকুলী বাজারে এসে নামবেন। যদি সেতু থেকে মোটরসাইকেলে আসেন জনপ্রতি ভাড়া নিবে ২শ’ টাকা আর সিনজি দিয়ে এলে ভাড়া নিবে ১৫০শ’ টাকা করে। বিন্নাকুলী অথবা লাউড়েরগড় বাজার থেকে যাদুকাটা নদী পার হয়ে হেঁটে অথবা অটোরিকশা দিয়ে সুজা শিমুল বাগানে চলে আসতে পারবেন। অটোরিকশার ভাড়া নেবে জনপ্রতি ২০ টাকা করে। এছাড়া যারা গাড়ী নিয়ে সরাসরি আসতে তারা তাহিরপুর সদও হয়ে বাদাঘাট বাজার দিয়ে সোজা শিমুল বাগানে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার