বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান এক প্রেমিকা, বিয়ে না করলে আমাকে মরতে হবে
০৬ এপ্রি ২০২৩, ১২:৫৯ অপরাহ্ণ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন এক প্রেমিকা। তার দাবি বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেও বিয়ে করতে চাইছেন না প্রেমিক লিখন কুমার রাজবংশী। এখন লিখন বিয়ে না করলে তার মরা ছাড়া গতি নেই বলে জানিয়েছেন প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া কলেজছাত্রী।
অভিযুক্ত লিখন কুমার রাজবংশী উপজেলার বেলকুচি পৌরসভার গাড়ামাশি পূর্বপাড়ার বানছা চন্দ্র রাজবংশীর ছেলে ও বেলকুচি সরকারি কলেজের অনার্স (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী প্রেমিকা একই কলেজের ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে গাড়ামাশি প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন কলেজ ছাত্রী প্রেমিকা।
জানতে চাইলে অবস্থান নেওয়া কলেজ ছাত্রী বলেন, প্রায় এক বছর আগে সম্পর্ক হয় লিখনের সাথে। এর জের ধরে আমরা একসঙ্গে নানান জায়গায় ঘোরাফেরা করেছি এবং লিখনের বন্ধুর বাড়িতেও নিয়ে গেছে আমাকে। সেখানে নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছে লিখন। এরপর বিয়ের কথা বললেই সে তালবাহানা শুরু করে। আমি বাধ্য হয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর থেকে তার বাড়িতে এসে অবস্থান নিয়েছি।
কলেজ ছাত্রী আরও বলেন, আমি এখানে অবস্থান নেওয়ার পর থেকেই আমাকে বিয়ে করবে না মর্মে জানিয়ে দিয়েছে লিখন। এছাড়াও গতকাল রাত ১২টার দিকে লিখন, তার বাবা-মা ও দাদারা মিলে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি তাদের পায়ে ধরে কোনোরকমে এখানে থাকতে পেরেছি। যেহেতু লিখনের সঙ্গে আমার একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়ে গেছে তাই লিখনকে বিয়ে করা ছাড়া উপায় নেই। তাকে বিয়ে না করলে আমাকে মরতে হবে।
এদিকে সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও শারীরিক সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন প্রেমিক লিখন। উল্টো সেই মেয়েকে খারাপ দাবি করে প্রেমিক লিখন বলেন, তার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল এটা সত্য, কিন্তু অন্যান্য আরও ছেলের সাথে তার সম্পর্ক আছে। আমি এই মেয়েকে কোনোভাবেই বিয়ে করতে পারব না।
এ ব্যাপারে লিখনের দাদা রিপন কুমার রাজবংশী বলেন, লিখন বলেছে এই মেয়ে ভালো না। আমরা জেনে শুনে কোনোভাবেই এই মেয়ের সাথে আমার ছোট ভাইয়ের বিয়ে দিতে পারি না। আমরা চেষ্টা করছি মিটমাট করার জন্য। এছাড়াও গতকাল মেয়ের অভিভাবকরা এসেছিলেন এবং রাতে স্থানীয় কিছু মাতবররা বসে মেয়েকে এক লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা তখন রাজি হইনি। কিন্তু আমরা যখন টাকা দিতে চাইলাম তখন মেয়েপক্ষ কিছু না বলেই তারা চলে গেছে।
এ ব্যাপারে বেলকুচি পৌরসভার স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জুলফিকার মাহমুদ শিপন বলেন, মেয়ের পরিবারকে খবর দিয়ে আনা হয়েছিল। এলাকার মাতবররা বসে একটা সমাধানে আসা হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যেই মেয়ের পরিবার কিছু না বলে চলে যায়। আমরা বসে প্রমাণ পেয়েছি এই মেয়ের একাধিক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। লিখনের পরিবার এই মেয়ের সঙ্গে তাদের ছেলের বিয়ে দেবে না বলেও জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে বেলকুচি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। কিন্তু এ ঘটনায় থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 982 বার