বিয়ানীবাজারে নিজ কক্ষে প্রধান শিক্ষিকা লাঞ্ছিত, তোলপাড়
২১ জানু ২০২৩, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিয়ানীবাজারের সদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন। সেখানকার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা কফিল আহমদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার এই অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তৎপরতা চালাচ্ছে স্হানীয় একটি মহল। এ ঘটনার আইনগত প্রতিকার দাবি করেছেন বিদ্যালয়ের অভিভাবক, পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকবৃন্দ।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে সদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে পরিচালনা কমিটি ও পিটি কমিটির সভা চলছিল। এ সময় সভা চলাকালে অনধিকারভাবে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে প্রবেশ করে তাদের দাওয়াত দেয়া হয়নি কেন বলে জানতে চান কফিল ও তার সহযোগীরা। তখন সন্ত্রাসী কায়দায় তারা প্রধান শিক্ষিকার টেবিলের উপর চাপড়াতে থাকেন। এ সময় বিদ্যালয় এলাকায় এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তখন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে মারধর করেন কফিল ও তার ভাই বিএনপি কর্মী কামাল হোসেন-এমন অভিযোগ করেছেন সভাপতি নিজেই। এ ঘটনায় আব্দুর রহমান বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে এ ঘটনার অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যে কফিলের চাচাতো ভাই সেলিম উদ্দিন তার ২য় শ্রেণীতে পরীক্ষা দেয়া মেয়েকে কেন পাশ করে দেয়া হয়নি তা প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে চান। তখনো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হালিমা বেগম কারণ ব্যাখ্যা করতে চাইলে তার উপড় চড়াও হন সেলিম, কফিল ও কামাল। তারা হালিমা বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে কক্ষ থেকে বাইরে আসার কথা বলেন। তাকে খুন করার হুমকিও দেন হামলাকারীরা।
হালিমা বেগম জানান, এমন অবস্থা চলতে থাকলে তারা বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বন্ধ করে দিবেন। তিনি অভিযোগ করেন, কফিল এবং সেলিম আগেও একাধিকবার বিদ্যালয়ে এসে খারাপ আচরণ করেছে। তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসকে অবহিত করবেন বলে জানান।
বিয়ানীবাজার উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকরতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষিকা ও সভাপতির সাথে লাঞ্চনামূলক আচরণের মৌখিক অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি আইনগতভাবে দেখা হবে।
জানা যায়, তিলপাড়া ইউনিয়নস্হ সদরপুর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে সম্প্রতি কফিল উদ্দিনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। বিএনপি পরিবার হিসেবে চিহ্নিত কফিলকে এই পদের জন্য নাম প্রস্তাব করায় এলাকার আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার পরিবারের অন্য সদস্যরা বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যান সম্পাদক ফকু মিয়া।
এলাকাঘুরে জানা যায়, কফিলের ভাই বিএনপি কর্মী কামাল বেশ কিছুদিন আগে দাসউরা সিনিয়র মাদ্রাসার এক ছাত্রের সাথে খারাপ আচরণ করায় এলাকার মানুষের তোপের মুখে পড়ে। বিগতদিনে কামাল এবং কফিল তাদের আপন চাচা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা সমছুল ইসলামকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।
একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষিকা সরকারি দায়িত্ব পালনকালে এমনভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা সন্ত্রাসী কফিল, কামাল এবং সেলিমের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার