বাসে আগুন দিয়ে র্যাবের হাতে ধরা ৪
২১ নভে ২০২৩, ০১:১৩ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মিরপুরের কালশী এলাকায় বসুমতি পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
তারা হলেন- আল মোহাম্মদ চাঁন (২৭), মো. সাগর (২৫), মো. আল আমিন রুবেল (২৯) ও মো. খোরশেদ আলম (৩৪)।
মঙ্গলবার সকালে কারওয়ানবাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তাদেরকে মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৮ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালশী সড়কে ‘বসুমতি পরিবহনের’ একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে মঈন বলেন, তারা বিরোধী একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী। তাদের দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশনায় আল মোহাম্মদ চাঁন রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবীর আশপাশের এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগ করার পরিকল্পনা করে।
পরবর্তীতে চাঁন ও তার সহযোগী সাগর ও রুবেলসহ রাজধানীর মিরপুর-১১, তালতলা নাভানা, কালশী রোড, সিরামিক রোড এলাকায় সুবিধা জনকস্থানে সুবিধামতো সময়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য রাতে রেকি করে।
তিনি বলেন, চাঁন যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ এমএল পরিমাণ পেট্রোল বের করে টাইগার এনার্জি ড্রিংকের বোতলে ভরে ওইদিন সন্ধ্যায় আল আমিনের কাছে দেয়।
কালশী সড়কে মসজিদের পাশে পার্ক করা বসুমতি পরিবহনের একটি বাস সুবিধাজনক হওয়ায় সাগর ও আল আমিন বাসের নিকট যায় এবং আল আমিন বাসের মাঝের জানালা খুলে পেট্রোল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ সময় চাঁন রাস্তার আইল্যান্ডের উপরে দাঁড়িয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের নির্দেশনা দেন ও ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন।
অন্য নেতারা যাতে কৃতিত্ব না নিতে পারেন
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অন্য কোনো বিরোধী দলের সদস্যরা যাতে এ ঘটনার ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নিকট প্রেরণ করে কৃতিত্ব নিতে না পারে সেজন্য চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার সাথে সাথেই খোরশেদকে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ধারণ করে তাৎক্ষণিক তাকে পাঠাতে বলেন।
পরবর্তীতে চাঁন ধারণকৃত ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নিকট পাঠায়।
২০ হাজার টাকায় আগুন, উসুল ১০ হাজার
মঈন বলেন, বাসে আগুন দেওয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা চাঁনকে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্থানীয় নেতা ১০ হাজার টাকা পাঠায়।
চাঁন সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা করে দেন আর নিজে ৩ হাজার টাকা রাখেন। মূলত দলের নিকট নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা এ সকল নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ধারণ করে তাদের দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নিকট পাঠাত।
এছাড়াও নাশকতার এ সকল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে তাদের সমমনা অন্যান্য অনুসারীদের নাশকতা সৃষ্টিতে প্ররোচিত করতো।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাঁন দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় যানবাহনে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা এবং নেতৃত্ব দেয়।
এছাড়াও সে নাশকতা ঘটানোর জন্য সমর্থকদের কাজ ভাগ করে দিতো ও টাকা সংগ্রহ করে সকলের মাঝে বিতরণ করতো বলে জানায়।
চাঁনের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় মাদক সংক্রান্ত ২টির বেশি মামলা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, তারা স্থানীয় যুবদলের সঙ্গে জড়িত। যদিও বড় কোনো পদে নেই।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 982 বার