বান্দরবানে আরও ৫ ‘জঙ্গি’ আটক, সিলেটের দুই
১২ জানু ২০২৩, ০৭:৫৭ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি-রুমা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার প্রশিক্ষণরত আরও পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাতে র্যাব বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে।
এর মধ্যে সিলেটের এক যুবক ও এক কিশোর রয়েছেন। যুবকের নাম হচ্ছে- মো. সাদিকুর রহমান সুমন ফারকুন (৩০)। তবে কিশোরের (১৭) নাম প্রকাশ করেনি র্যাব।
বাকিরা হলেন-নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি এলাকার নিজামুদ্দিন হিরন ইউসুফ (৩০) এবং কুমিল্লার আহমেদ সাইহা (২৭) ও মো. বাইজিদ ইসলাম মুয়াজ (২১)। খবর ‘আজকের পত্রিকা’র।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) বান্দরবানের র্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।
মঈন সাংবাদিকদের বলেন, ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে আটজন তরুণের নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নিখোঁজ-সংক্রান্ত ব্যাপারে ২৫ আগস্ট নিখোঁজদের পরিবার কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। এরপর র্যাব নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। অভিযানে আট তরুণের মধ্যে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া নিলয়কে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে র্যাব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় এবং নিলয়কে তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নিলয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে গত বছরের ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া রিফাতসহ সাতজনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নব্য জঙ্গি সংগঠন ‘জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার’ কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য দেয় বলে তিনি জানান।
মঈন আরও বলেন, এরপর র্যাবের গোয়েন্দা শাখা এবং বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বেশ কয়েকটি অভিযানে কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া আট তরুণের মধ্যে তিনজন ও নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার ৩১ জনকে আটক করে। আর এই জঙ্গি সংগঠনকে সহায়তা এবং সামরিক প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের ১৪ নেতা ও সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মঈন জানান, বিভিন্ন পর্যায়ে গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে- জামাআতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া সংগঠনটির আমির মো. আনিসুর রহমান মাহমুদ। উগ্রবাদী এই সংগঠনে ছয়জন ‘শুরা’ সদস্য রয়েছেন। তাঁরা দাওয়াতি, সামরিক, অর্থ, মিডিয়া ও উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছে।
এদের মধ্যে শুরা সদস্য আবদুল্লাহ মাইমুন দাওয়াতি শাখার প্রধান, মাসকুর রহমান সামরিক শাখার প্রধান, মারুফ আহমেদ সামরিক শাখার দ্বিতীয় প্রধান, মোশারফ হোসেন রাকিব অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান ও শামীম মাহফুজ প্রধান উপদেষ্টা, প্রশিক্ষণের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক এবং ভোলার শায়েখ আলেম বিভাগের প্রধান হিসেবে সংগঠনটিতে দায়িত্ব পালন করছেন।
নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের ৫৫ জন সদস্যকে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে দাবি করে মঈন বলেন, এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনটির প্রধান নাথান বম, সামরিক কমান্ডার কথিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ভাংচুং লিয়ান বম, মিডিয়া শাখার প্রধান লালজং মুই মাওয়াইয়া এবং লাল মুন ঠিয়াল চির চির ময়।
এসব তথ্য পাওয়ার পর বিভিন্ন সরকারি সংস্থা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় র্যাব নব্য জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণরত ৫৫ জন জঙ্গি এবং তাঁদের সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-৭-এর অভিযানে বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি এলাকা থেকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত ৫৫ জন জঙ্গি সদস্যদের মধ্যে পাঁচজনকে আটক করে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1.1K বার