পঞ্চগড়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ ও বাবার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় ৪ আসামি কারাগারে
১৩ ফেব্রু ২০২৩, ০১:০৭ অপরাহ্ণ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ে কলেজছাত্রীকে (২০) ধর্ষণ ও তাঁর বাবার আত্মহত্যার প্ররোচনার ঘটনায় করা দুই মামলার প্রধান আসামি পলাশ চন্দ্র বর্মণসহ (২৫) চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
গতকাল রোববার দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালতের বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সদর থানায় দায়ের করা ধর্ষণের মামলায় চার আসামি আজ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলি আদালত-১) আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক এম এম মাহবুব ইসলাম প্রধান আসামি পলাশ চন্দ্র বর্মণের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বাকি তিন আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে আটোয়ারী থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে করা মামলায় ওই চার আসামি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (আমলি আদালত-৫) বিচারক মো. আশরাফুজ্জামানের আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। পরে তাঁদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
কারাগারে পাঠানো অন্য আসামিরা হলেন প্রধান আসামির বাবা শ্যামল চন্দ্র বর্মণ (৪৬), প্রতিবেশী ভবেন চন্দ্র বর্মণ (৫০) ও কাজল চন্দ্র বর্মণ (২৩)। তাঁরা সবাই সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
১ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের একটি গ্রামে গাছের ডালে এক ব্যক্তির (৫০) গলায় চাদর প্যাঁচানো ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। রাতেই আটোয়ারী থানা-পুলিশের সহায়তায় সদর থানা-পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, কলেজছাত্রী (২০) মেয়েকে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দিয়ে সুরাহা না পেয়ে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।
মৃত ব্যক্তির স্বজনেরা জানান, ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পলাশ চন্দ্র বর্মণ (২৫) নামের এক প্রতিবেশী যুবক ওই কলেজছাত্রীকে বাড়ির পাশে নিয়ে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় আহত হলে ওই তরুণীকে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ৪ ফেব্রুয়ারি মারা যাওয়া ব্যক্তির বড় ছেলে বাদী হয়ে তাঁর বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে পলাশ চন্দ্র বর্মণসহ চারজনকে আসামি করে সদর থানায় ধর্ষণ এবং বাবার মৃত্যুর ঘটনায় আটোয়ারী থানায় একই ব্যক্তিদের নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেন। মামলার আসামির তালিকায় মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায়ের নাম উল্লেখ না করলেও ঘটনার বিচারে তাঁর অসহযোগিতার কথা এজাহারে উল্লেখ করা হয়। লাশ উদ্ধারের স্থানটি আটোয়ারী উপজেলায় হওয়ায় দুই থানায় মামলা করতে হয়েছে বলে জানা গেছে। পরে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় আসামির তালিকায় ইউপি চেয়ারম্যানের নামও অন্তর্ভুক্ত করে আটোয়ারী থানা-পুলিশ।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, আজ দুটি মামলায় চার আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত ধর্ষণের মামলায় প্রধান আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান এবং অন্য তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেন। অন্যদিকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় চারজনের জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত। আর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছেন।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার