ঠিকাদারের কাছে জিলাপি খেতে চাইলেন ওসি

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

১৫ এপ্রি ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ


ঠিকাদারের কাছে জিলাপি খেতে চাইলেন ওসি

নিউজ ডেস্ক:
কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার কাছে জিলাপি খেতে চেয়েছেন ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন। ঠিকাদার ও ওসির এ সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে।

ওই কথোপকথনে ওসি মনোয়ার হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘সেফটি সিকিউরিটি দিলাম তো সারা জীবন। তোমরা যে ১৮ লাখ টাকার কাজ করে ১০ লাখ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকরে খাওয়ালে না। খাইয়া যে একটু দোয়া কইরা দেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের। তোমার জায়গায় আমি হইলে সুদের উপরে টাকা আইনা আগের জিলাপি খাওয়াইতাম। দোয়াডা হইলো সবার আগে। পরে তো বিল পামু, তাই না?’

একপর্যায়ে ওসি আরও বলেন, ‘ঠিক আছে তাহলে, জিলাপির অপেক্ষায় রইলাম নাকি? না না, জিলাপি হইলেই হইবো। এক প্যাঁচ আধা প্যাঁচ (এক পিস আধা পিস) জিলাপি দিলে হইবো। বিভিন্ন পারপাসে হইলে পাবলিক খাইলো আর কী, বোঝ না? এ সময় ভুক্তভোগী ছাত্রনেতা বলেন, ‘বিল-টিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেখবো নে।’ তার এ কথার উত্তরে ওসি বলেন, ‘ঠিক আছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রেকর্ডটা ভাইরাল হলে পক্ষে-বিপক্ষে তুলকালাম কাণ্ড তৈরি হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইটনা শাখার সংগঠক আফজাল হুসাইন শান্ত বলেন, ‘আমি ইটনা উপজেলার বলদা হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪৮০ মিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পাই টেন্ডারের মাধ্যমে। কাজ শেষ হওয়ার পরে থানায় গেলে তিনি (ওসি) জিলাপি খেতে টাকা চাইতেন। তখন রেকর্ড করতে পারিনি। পরে ওসির সঙ্গে ফোনে আমার কথা হলে তিনি আমার কাছে ফসল রক্ষা বাঁধ করে যে লাভ হয়েছে, সেখান থেকে জিলাপি খেতে চান।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি কাজ পেয়েছি টেন্ডারের মাধ্যমে। এখানে ওসি কীভাবে জিলাপি খেতে চাইতে পারেন? আমার কাছে যদি জিলাপি খাইতে চাইতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা শান্তিতে আছে বুঝতে পারছেন?’

এ বিষয়ে ইটনা থানার ওসি মনোয়ার হোসেন জানান, ‘তিনিও অডিও রেকর্ডটি শুনেছেন। তিনি দাবি করেন, এ রেকর্ডটা এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি হতে পারে। আমি যতটুকু শুনেছি এই ছেলের নামে পিআইসির টেন্ডার নাই তাহলে আমি কেন এ ছেলের কাছে জিলাপি চাইবো। হয়তো কোনো এক সময় এই ছেলে আমাকে ফোন দিয়েছিল ওই ফোনের সময়টা ঠিক রেখে এআইর মাধ্যমে তৈরি করেছে। আর যে রেকর্ডটা মানুষজন আমাকে শুনিয়েছে এতে তো অনৈতিক কিছু দেখছি না। আমি মানুষকে জিলাপি খাওয়াতে বলেছি।

টাকার পরিমাণের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এ ছেলে ছোট মানুষ। তার কাছে টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসতে পারে না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘ঘটনার তদন্তের দাবি জানাই।’

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করব। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 995 বার