গাড়ি আটকে সড়কে খেললেন শাবি শিক্ষার্থীরা
০৭ জুলা ২০২৪, ০৮:২১ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার:
সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা পদ্ধতির সংস্কার এবং ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আজ রবিবার (৭ জুলাই) সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালযয়ের শিক্ষার্থীরা। অবরোধ চলাকালে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে ক্রিকেট খেললেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৭ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি চলাকালে সড়ক ব্লক করে ক্রিকেট খেলেন তারা।
শিক্ষার্থীদের এই সড়ক অবরোধে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। রাস্তায় সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। সচেতন মহল বলছেন, রাস্তায় ভোগান্তি সৃষ্টি করে এমন এমন আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এর আগে শনিবার (৬ জুলাই) বিকালেও শাবির ছাত্র-ছাত্রীরা একই দাবিতে ঘণ্টাখানকে সময় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
রবিবার সড়কে অবস্থানের আগে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শাবি শিক্ষার্থীরা। পরে প্রায় এক ঘন্টা সড়কে অবস্থান করেন তারা। এসময় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘সারাবাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই, আঠারোর পরিপত্র বহাল চাই’, ‘কোটা না মেধা? মেধা মেধা’ ও ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’সহ নানা স্লোগান দেয়।
আন্দোলনকারীরা বলেন, যে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই বৈষম্য দূর করার জন্যই আমরা আজ আন্দোলনে নেমেছি। কোটা পদ্ধতির কারণে অযোগ্য লোকেরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যাচ্ছে। এতে যোগ্যতাসম্পন্নরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার ফলে দেশে দুর্নীতি-অনিয়ম বেড়েই যাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনে নেমেছি। কোটাপ্রথা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। সাংবিধানিকভাবে এটি শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। আমাদের চারটি দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে।
তাদের দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল, পরিপত্র পুনর্বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সরকারি চাকুরিতে (১ম থেকে ৪র্থ শ্রেণি) সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা রেখে ‘কোটা সংস্কার’ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করা।
এদিকে, কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি না মানা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। সে সময় কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়৷ পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৯ জুন কোটা পদ্ধতির রায় পুনর্বহাল করে হাইকোর্ট।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 991 বার