ওসমান হাদির খুনি ফয়সালের দুই সহযোগী ভারতে আটক

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

২৮ ডিসে ২০২৫, ০২:৩৪ অপরাহ্ণ


ওসমান হাদির খুনি ফয়সালের দুই সহযোগী ভারতে আটক

স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হামলাকারীর দুই সহযোগী ভারতে আটক হয়েছে। এই তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডটি পূর্ব-পরিকল্পিত। মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম ওরফে দাউদ খান দেশে নেই; তিনি ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে গেছেন। ফয়সালকে সহায়তা করার অভিযোগে পুত্তি এবং স্বামী নামের তার দুই সহযোগী ভারতের মেঘালয়ে আটক হয়েছে।

ডিএমপি জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। দ্রুত মামলার চার্জশিট দাখিলের পরিকল্পনা রয়েছে; আগামী ৭–১০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে এবং ৭ জানুয়ারির মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে।

তদন্তে পুলিশ দুটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, মোটরসাইকেল, ভুয়া নম্বর প্লেট এবং ৫৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ২১৮ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করেছে। তবে হত্যার উদ্দেশ্য (মোটিভ) এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। নজরুল ইসলাম জানান, মূল সন্দেহভাজনকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে মোটিভ সম্পর্কেও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, মেঘালয় পুলিশের সঙ্গে ‘অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে’ যোগাযোগ করে ফয়সালকে সহায়তা করার জন্য দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত চলমান রয়েছে, এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আশা করছে, মূল সন্দেহভাজন ফয়সালকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে মামলার চার্জশিট দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে পল্টন থানার বক্স কালভার্ট রোডে হামলার শিকার হন শরিফ ওসমান হাদি। মতিঝিল মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে প্রচারণা চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলে আসা প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদ ও তার অজ্ঞাত পরিচয় সহযোগী হাদিকে লক্ষ্য করে চলন্ত অবস্থায় গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। মামলায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা ও বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। তবে হাদির মৃত্যুর পর গত ২০ ডিসেম্বর আদালতের আদেশে মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (হত্যা) সংযোজনের আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্দিক আজাদ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 989 বার