স্টাফ রিপোর্টার:
উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়নের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, কিছু দিনের মধ্যে খসড়া আইন জাতীয় সংসদে তোলা সম্ভব হবে।
সোমবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল’ পাসের আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা বিচারক নিয়োগে আইন করার দাবি জানান।
বিলের আলোচনায় গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এখন উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্যতার কথা বলা থাকলেও যোগ্যতার মানদণ্ড বলা নেই। এক্ষেত্রে বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন করা হলে নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ থাকবে না। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন হয়েছে। একইভাবে বিচারক নিয়োগেও আইন করা দরকার।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কোনো আইন ছিল না। গত বছর এই আইন হয়েছে এবং আইনের ভিত্তিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। একইভাবে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগেও আইন করার কথা ছিল। কিন্তু তা এখনো হয়নি। অনেকক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ হয়। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামও একই দাবি জানান।
২০১২ সালে গত নবম জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত একটি বেসরকারি বিল জমা দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। আইন কমিশনও এ সংক্রান্ত একটি খসড়া তৈরি করে রাষ্ট্রপতির কাছে দিয়েছিল।
পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, তিনি আশ্বস্ত করতে পারেন যে, বিচারক নিয়োগের ব্যাপারে আইন করার জন্য সরকার কাজ করছে। কিছু দিনের মধ্যেই এই আইন সংসদে আনতে পারবেন।
আলোচনা শেষে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেয়া সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবগুলো নিস্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
১৯৮২ সালে সামরিক আমলে অধ্যাদেশ দিয়ে এ সংক্রান্ত আইন করা হয়। সেটি বাতিল করে বাংলায় নতুন এই আইনটি করা হচ্ছে।
বিলে বলা হয়েছে, অবসরের পর প্রধান বিচারপতি তার জীবদ্দশায় গৃহসহায়ক, গাড়িচালক, দারোয়ান সেবা, সাচিবিক সহায়তা এবং অফিস কাম বাসভবনের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা বিশেষ ভাতা পাবেন।
বিলে বলা হয়েছে, একজন বিচারককে তার মোট কর্মকালীন ছুটির শর্ত অনুযায়ী অর্ধ গড় বেতনে মোট ৩৬ মাসের অধিক ছুটি মঞ্জুর করা যাবে না। কোনো বিচারকের প্রকৃত কর্মকালের এক-চব্বিশাংশ ভাগ মেয়াদ পর্যন্ত তাকে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাবে। পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি এককালীন পাঁচ মাস এবং অন্য কোনো ছুটি এককালীন ১৬ মাসের অধিক মঞ্জুর করা যাবে না। কোনো বিচারক পূর্ণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালে তাঁর নির্ধারিত মাসিক বেতনের সমান হারে ছুটিকালীন বেতন প্রাপ্য হবেন।
কোনো বিচারক অনভিপ্রেত কোনো আঘাতের দ্বারা বা কারণে অথবা স্বীয় দায়িত্ব পালনকালে আহত হয়ে কর্মে অক্ষম হলে বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি প্রাপ্য হবেন।
বিলে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি বিচারকদের পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষ হবেন। অবসরে যাওয়া বিচারকেরা উৎসব ও বাংলা নববর্ষ ভাতা পাবেন।
সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিচারকদের বেতন ও ভাতা বাড়ানো হয়। বর্তমানে প্রধান বিচারপতি এক লাখ ১০ হাজার টাকা, আপিল বিভাগের বিচারক এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা এবং হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক ৯৫ হাজার বেতন পান। এছাড়া বেতনের ৫০ শতাংশ হারে বিশেষ ভাতা পান তারা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: আব্দুল খালিক
আইন-উপদেষ্টা: ব্যারিস্টার ফয়সাল দস্তগীর, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।
উপ-সম্পাদকঃ ফুজেল আহমদ
প্রকাশক কর্তৃক উত্তরা অফসেট প্রিন্টার্স কলেজ রোড, বিয়ানীবাজার, সিলেট থেকে মুদ্রিত ও শরীফা বিবি হাউজ, মেওয়া থেকে প্রকাশিত।
বানিজ্যিক কার্যালয় :
উত্তর বাজার মেইন রোড বিয়ানীবাজার, সিলেট।
ই-মেইল: dailyajkersylhet24@gmail.com
মোবাইল: ০১৮১৯-৫৬৪৮৮১, ০১৭৩৮১১৬৫১২।
শাফিয়া শরীফা মিডিয়া বাড়ীর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান দৈনিক আজকের সিলেট, রেজি নং: সিল/১৫৩