আরও দেড় বছর আইজিপি থাকছেন সুনামগঞ্জের চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন
০৭ জানু ২০২৩, ০১:১৫ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের চাকরির মেয়াদ বাড়াতে যাচ্ছে সরকার। পুলিশের সৎ-নির্ভীক, দক্ষ-চৌকস এই মেধাবী কর্মকর্তা আরও দেড় বছরের জন্য আইজিপি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে চলেছেন সুনামগঞ্জের এই কৃতিসন্তান।
সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যেই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডার অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর গ্রেড-১ পদোন্নতি পান। চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করে আগামী ১১ জানুয়ারি তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেলে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও দেড় বছর পুলিশের সর্বোচ্চ পদ অলঙ্কৃত করবেন। সেই হিসাবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় তিনিই থাকবেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকসহ (সম্মান) স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী মামুন ব্যক্তিজীবনে দুই পুত্রসন্তান ও এক কন্যাসন্তানের জনক। তার স্ত্রী ঢাকার হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক।
বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ১৯৮৬ তথা অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট (এএসপি) হিসেবে যোগ দেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে তিনি র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন—র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালের বছরের মে মাসে তিনি অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি পান। এর আগে তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন।
এছাড়াও আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশ সদর দপ্তর, মেট্রোপলিটন পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কাজ করার মাধ্যমে তিনি বিশ্ব শান্তিরক্ষায় অসামান্য অবদান রেখেছেন।
চৌকস, পেশাদার ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পুলিশ অফিসার হিসেবে সমাদৃত চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বাহিনীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) ও দুইবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এ ভূষিত হন।
নবগঠিত ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রথম ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালনের গৌরবের অধিকারী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তার হাত ধরেই ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা পায়। এরপর তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি লাভের পর পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) পদে দায়িত্ব পালনকালেও তিনি দক্ষতার পরিচয় দেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশের সবচেয়ে পুরনো ইউনিট সিআইডি প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিআইডিতে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবের পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ের ল্যাবের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। ফলে মামলার আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা ও এক্সপার্ট ওপিনিয়ন প্রদান প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
এছাড়া মামলা তদন্তে পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তদন্তের মান বাড়াতে তিনি প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেন। এতে সিআইডির মামলা তদন্তে গুণগত ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটে এবং মামলা নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি পায়।
করোনাভাইরাস মহামারির ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোসহ র্যাবের নানাবিধ ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের পেছনেও এই ইউনিটটির সেসময়ের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের অবদান রয়েছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 1K বার