অর্থ সংকটে সিসিক, থমকে আছে উন্নয়ন

Daily Ajker Sylhet

দৈনিক আজকের সিলেট

০৬ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৫ অপরাহ্ণ


অর্থ সংকটে সিসিক, থমকে আছে উন্নয়ন

স্টাফ রিপোর্টার:
অর্থ সংকটে থমকে আছে সিলেট নগরীর উন্নয়ন কাজ। বিভিন্ন প্রকল্প বাতিল হয়ে যাওয়ায় অনেক কাজ পড়ে আছে অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায়। আর যেসব কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে সেগুলোরও বিল যথাসময়ে পাচ্ছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। নগরভবনের কাছে ঠিকাদারদের পাওনা ৩৭ কোটি টাকা। বকেয়া বিলের জন্য ঠিকাদাররা চাপ দিলেও সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) চেয়ে আছে মন্ত্রণালয়ের দিকে।

আর্থিক টানাটানির এই সময়েও বরাদ্দকৃত ৬০ কোটি টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে সিসিককে। সময়মতো সম্প্রসারিত নতুন ওয়ার্ডের উন্নয়ন কাজের দরপত্র আহ্বান করতে না পারায় সিসিককে বাধ্য হয়ে এই টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে বলে সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, সিলেট নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কার, ছড়া-খাল সংস্কার ও রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, সড়ক মেরামতসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান ছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর চলমান কাজ পড়ে যায় অনিশ্চয়তায়। সেপ্টেম্বর মাসে জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহিত প্রকল্পগুলো অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় উল্লেখ স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় থেকে বাতিল করে দেয়া হয়।

ফলে নগরজুড়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বাতিল হওয়া প্রকল্পগুলো রিভাইস করে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পুণরায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান।

সিসিক সূত্র জানায়, জলাবদ্ধতা নিরসনের বিভিন্ন কাজে ঠিকাদারদের প্রায় ৩৭ কোটি টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। করপোরেশনের তহবিলে টাকা না থাকায় এই বিল পরিশোধ সম্ভব হচ্ছে না। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। দেওয়া হয় আল্টিমেটামও। কিন্তু সিটি করপোরেশনের তহবিলে টাকা না থাকায় বকেয়া বিল পরিশোধ সম্ভব হয়নি। নতুন বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় হলে তবেই বিল পরিশোধ করবে সিসিক।

সিসিক কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় আগামী বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তির শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই সময় সিটি করপোরেশনকে অসহায় অবস্থায় তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।

এদিকে, বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ডের সড়ক, ড্রেন ও স্ট্রিট লাইটের জন্য নতুন অর্থ বছরে ১৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছিল সিসিক। কিন্তু সময়মতো দরপত্র আহ্বান করতে না পারায় প্রায় ৬০ কোটি টাকা ফেরত যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিস্ট সূত্র জানিয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশন কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি মাছুম ইফতেখার রসুল শিহাব বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ যেসব ঠিকাদার করেছেন তাদের বিল বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বিলের জন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় করপোরেশন বিল দিতে পারছে না। আগের টাকা না পাওয়ায় ওই প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজও কোন ঠিকাদার করছেন না।’

সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহিত প্রকল্পগুলো হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পগুলোর প্রায় ৩৭ কোটি টাকার বিল বকেয়া রয়েছে। ফান্ডের অভাবে বকেয়া বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে না।

এছাড়া ৫০ কোটি টাকার চলমান কাজও আটকে আছে। প্রকল্পগুলো রিভাইস করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত বকেয়া বিলও পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে : 985 বার